নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ, ২০২১ ১৯:০৪

শাল্লায় তাণ্ডব: মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের দাবি

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের গ্রেপ্তারের দাবি ওঠেছে। শাল্লার ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এমন দাবি জানানো হয়।

সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে নাগরিক মোর্চা ’দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’। বিকেলে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে নগরের জিন্দাবাজার পয়েন্ট ঘুরে আবার শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, শাল্লায় হামলার আগের দিন দিরাইয়ে হেফাজতের সমাবেশে বক্তব্য দেন বিতর্কিত বক্তা মামুনুল হক। তার উস্কানিমূলক বক্তব্যে উদ্বুব্ধ হয়েই পরদিন শাল্লায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। তাই এই হামলার ঘটনায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।

বক্তারা বলেন, আগের দিন ঘোষণা দিয়েই শাল্লায় মিছিল করে হেফাজতে ইসলাম। পুলিশের উপস্থিতিতে সে মিছিল থেকেই হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন শাল্লায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই এই ঘটনার জন্য শাল্লার প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

বক্তারা বিতর্কিত হেফাজত নেতা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বলেন, মুজিববর্ষের শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন মামুনুল হক। এরপরও সরকার বিতর্কিত এ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার না করে উলটো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সমাবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছে। এসব সমাবেশে সরকারদলীয় অনেক নেতাও অংশ নিচ্ছেন। সরকারে আশকারা পেয়ে মামুনুল হক ও হেফাজতে ইসলাম সারাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে যাচ্ছে। মামুনুল হকের উসকানিতেই শাল্লায় হামলা ঘটনা ঘটেছে।

বক্তারা মামুনুল হককে হামলার হুমকিদাতা হিসেবে আসামি করে মামলা দায়ের ও ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে এমন সংবাদের ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। বক্তারা শাল্লার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতারও দাবি জানান।

দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক দেবাশীষ দেবুর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্যে দেন দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক আবদুল করিম কিম, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাছিত শেরো, রিপন চৌধুরী, ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সভাপতি আশরাফুল কবির, সিলেট মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এম রশিদ আহমদ, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের সংগঠক রাজীব রাসেল, মার্কসবাদী পাঠক ফোরামের সংগঠক নিরঞ্জন সরকার অপু, সংস্কৃতিকর্মী হিতাংশু কর বাবু, তামিস্রা তিথি, সিলেট জেলা ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি মাসুদ রানা চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক বিজয় করিম, যুব ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগরের সভাপতি ধনঞ্জয় দাশ ধনু, যুব ছাত্র পরিষদের সদস্য সুপ্রিয় পাল রুপম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা মৃন্ময় দাশ ঝুটন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত