আবুল হোসাইন

১৩ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:৪৮

অব্যবস্থাপনা চরমে: চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হাওরবাসী

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক থাকলেও অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের নির্ধারিত ৪ টি টিউবওয়েল অকেজো থাকায় নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে পারছেনা রোগীরা। পানি শূন্যতায় ভেতরের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের বাথরুমগুলি ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।ফলে দুগর্ন্ধের কারনে ভর্তিকৃত রোগীদের ওয়ার্ডে থাকাই দায়। এমন অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। বারবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ও কোন কাজ হয়নি। এতে চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের থেকে আসা সাধারণ দরিদ্র লোকজন।

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অফিস সূত্রে জানা যায়,জুলাই মাসের প্রথম দিকে হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা ডাক্তার আশুতোষ দাশ নারায়নগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন হয়ে বদলি হওয়ার পর কিছুদিন দায়িত্বে ছিলেন ডাক্তার হাসিবুর রহমান। মোটামোটি ভালই চলছিলো হাসপাতালের কার্যক্রম। কিন্তু ৮ ই আগষ্ট সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বদলি হয়ে ডা: মোহাম্মদ কামরুল আলম প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

হাসপাতালের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকারি বিধি অনুযায়ী স্যার সার্বক্ষনিক কর্মক্ষেত্রে অবস্থানের কথা থাকলে তিনি বেশিরভাগ সময় থাকছেন সিলেটে। মাঝে মধ্যে নিজের ইচ্ছে মত কোনদিন ১১ টায় কোন দিন ১২ টায় আসেন, আবার বিকেল ২ টার পরই চলে যান। তাছাড়া কামরুল আলম যোগদানের পরপর তড়িগড়ি করে স্টোর কিপার নুরুল আমীন চৌধুরীকে সড়িয়ে অন্য একজনকে দায়িত্ব দেয়ায় অফিস স্টাফদের মধ্যে মিশ্র পতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ৮ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও রোষ্টার ডিউটি তালিকায় ৫ জনের নাম রয়েছে। ফলে প্রত্যন্ত অ ল থেকে আসা দরিদ্র রোগীরা অনেকেই হাসপাতালে এসে ডাক্তার বা ঔষধ কোনটাই পাচ্ছেন না।

ভেতরের মহিলা ওয়ার্ডে ৩দিন ধরে রোগী নিয়ে ভর্তি রাধানগর গ্রামের আনফর আলী বলেন,হাসপাতালের বাহিরের ৪ টি টিউবওয়েলই অকেজো। বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে নিরাপদ পানি ক্রয় করে ব্যবহার করতে হচ্ছে। রন্নারচর গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা ভূষন সরকার বলেন,৪ দিন যাবত ভর্তি আছি বাহির থেকে টাকা দিয়ে কিনে পানি খাচ্ছি।

ভর্তিকৃত রোগীদের সাথে আসা একাধিক মহিলা জানান,বাথরুমে পানি না থাকায় দুর্গন্ধের কারনে ওয়ার্ডে থাকাই দায়। এব্যাপারে ওয়ার্ডে দায়িত্বে থাকা নার্সদের কে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন আমাদের কিছু করার নেই,আমরা বড় স্যারকে জানিয়েছি। হাসপাতালের নৈশ প্রহরী অনুকুল চন্দ্র দে বলেন,৭দিন ধরে টিউবওয়েলগুলি অকেজো আছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কামরুল আলমের মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি কেটে দেন।

তবে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুল হাকিম জানান,উনি সিলেট ওসমানি মেডিকেলের অর্থপেডিক্সের ডাক্তার।মফস্বলের হাসপাতালে চাকুরির ইচ্ছে নেই। তাকে বদলির জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত