উগ্রবাদীদের হামলায় খুন হওয়া বিজ্ঞান লেখক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবি জানিয়েছেন সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। একইসঙ্গে ছয় বছরেও এই মামলার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

বুধবার (১২ মে) 'অনন্ত-স্মরণ' অনুষ্ঠানে এই ক্ষোভ ও দাবির কথা জানান তারা। দুপুরে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকার দস্তিদার দিঘীর পাড়ে অনন্তের স্মৃতিস্তম্ভের পাশে এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

২০১৫ সালের ১২ মে এই স্থানেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো লেখক অনন্ত বিজয় দাশকে। এই হত্যাকান্ডের ছয় বছর পূর্তিতে বুধবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষে অনন্তের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।

এ সময় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, অনন্ত বিজয়সহ মুক্তবুদ্ধি চর্চার মানুষদের হত্যা করে উগ্রবাদীরা বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলো। দেশ থেকে জঙ্গিদের নির্মূল করতে হলে এইসব হত্যার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ বলেন, ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণও শেষ হয়নি। এতে এই মামলার বিচার কাজ শেষ করতে সংশ্লিস্টদের আন্তরিকতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দেয়। বক্তারা দ্রুত এই মামলার বিচার কাজ সম্পন্নের দাবি জানান।

গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবশীষ দেবুর সঞ্চালনায় স্মরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, সংক্ষুব্দ নাগরিক আন্দোলন'র সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, বাসদ সিলেটের সমন্বয়ক আবু জাফর, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, অনন্ত বিজয় দাশের ভগ্নিপতি আইনজীবী সমর বিজয় শী শেখর প্রমুখ।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- লেখক আশিক শাওন, প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী নিরঞ্জন সরকার, প্রণব জ্যোতি পাল, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক রাজীব রাসেল, নাট্যকর্মী অরূপ বাউল, উজ্জ্বল চক্রবর্তী, তানভীর চৌধুরী পিয়েল, উত্তম কাব্য, রণি দাশ, নির্ঝর প্রকাশ প্রমুখ।

আলোচনা পর্ব শেষে গণজাগরণ মঞ্চ, বাসদ, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, নগরনাটসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে অনন্ত বিজয় দাশের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তুবক অর্পন করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ১২ সুবিদ বাজারে নিজ বাসার সামনে অনন্ত বিজয় দাশকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যে স্থানে তাকে হত্যা করা হয় সেখানে প্রয়াত যুবনেতা মঈনুদ্দিন আহমদ জালালের প্রচেষ্টায় নির্মিত হয় স্মৃতিস্তম্ভ। এরপর থেকে প্রতিবছর অনন্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে ওই স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পন করে আসছে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।