বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি

২৯ জুলাই, ২০২১ ১৬:৪৫

ফেসবুকে নারী সেজে প্রেম ও প্রতারণা

প্রথমে নারীদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খুলতেন ইমরান। এরপর সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে আকৃষ্ট করতেন পুরুদের। কথাবার্তা বলে তৈরি করতেন বন্ধুত্ব। আর নিজেকে দাবি করতেন আমেরিকা প্রবাসী। নারী সেজে সিলেটের বিয়ানীবাজারের এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইমরান আহমদ (৩২)। ইমরান সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকার মৃত ইকবাল আহমদের পুত্র ইমরান আহমদ (৩২)।

বুধবার রাতে প্রতারণার শিকার ওই যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে তার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। দীর্ঘ কয়েক মাস প্রেম করার পর আমেরিকায় নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ানীবাজারের যুবক সুলতানের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় প্রায় পৌনে ৫ লাখ টাকা। হঠাৎ করে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ যুবকের সন্দেহ হলে ভোক্তভোগী যুবক গত ২৩ জুলাই বিয়ানীবাজার থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এতে তিনি প্রতারণার শিকার হওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানান।

পুলিশ জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ নিশ্চিত হয় কথিত প্রেমিকা আসলে একজন পুরুষ। তিনি সিলেটের শেখঘাট এলাকায় বসবাস করেন। বুধবার বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশের সহযোগিতায় নগরীর শেখঘাট এলাকার জিতু মিয়া জমিদার বাড়ির বাসা থেকে তাকে রাত ৮টার দিকে গ্রেফতার করা হয়।

সাধারণ ডায়রি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রতারক ইমরান আহমদ আমেরিকান তরুণী নাজহা আক্তার ছাভা নাম ধরে যুবক সুলতান আহমদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। ফেসবুক থেকে পরিচয়ের পর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। নারী কন্ঠের মাধুর্য দিয়ে যুবক সুলতান আহমদকে প্রেমের ফাদে ফেলে বিকাশ এর মাধ্যমে প্রতারণা শুরু করেন প্রতারক ইমরান আহমদ।

অভিযোগকারী সুলতানকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নেন ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। বিভিন্ন সময়ে বিকাশের মাধ্যমে নেয়া টাকা আমেরিকা নেয়ার প্রক্রিয়া ব্যয় হচ্ছে বলে সুলতানকে জানান। গত ঈদুল আযহায় ইমরানের সাথে আলাপে সন্দেহ হয় ভিকটিম সুলতান আহমদের। তিনি বিয়ানীবাজার থানায় সাধারণ ডায়রি করেন।

বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুমেন বলেন, ইমরান আহমদ প্রকৃতিভাবে নারী কণ্ঠের। যার কারণে সে খুব সহজে যুবক সুলতানকে প্রেমের ফাদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়। আমরা তার সাধারণ ডায়রি ও মোবাইল নম্বর ধরে প্রযুক্তি সহায়তা তদন্ত নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রতারক ইমরামের স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিম থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ইমরান পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার বিষয়টি শিকার করেছে। তার বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজার থানায় মামলা (১৩/২৯-০৭-২১) দায়ের করা হয়েছে। ফেসবুকে নারীদের আইডি খুলে নারী কণ্ঠে কথা বলে প্রতারণা তার পেশা। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতের প্রেরণ করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত