বানিয়াচং প্রতিনিধি

১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:৫৫

হবিগঞ্জে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নৌকার মনোনয়ন

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেয়েছেন মিছবাহ উদ্দিন ভুইয়া। উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকা মিসবাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

তাকে মনোনয়ন দেয়ায় উপজেলাজুড়ে তুমূল আলোচনা ঝড় সৃষ্টি হয়েছে।

এরআগে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচবার অংশ নিয়েও জিততে পারেননি মিসবাহ। ওই ইউনিয়নে এর আগের চেয়ারম্যান ছিলেন তারই বড় ভাই।

মিসবাহ উদ্দিন ভূইয়া ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ জমা দিয়েছেন স্থানীয় চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মনোনয়ন পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা অবশ্য দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল, সেটি চক্রান্তমূলক। তদন্তে সব মিথ্যা প্রমাণ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আর আগায়নি তদন্ত সংস্থা।

আগামী ১১ নভেম্বর উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নে ভোটের তারিখ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কাকাইলছেও ইউনিয়নে নৌকা পেয়েছেন মিসবাহ্ উদ্দিন ভূঁইয়া।

জানতে চাইলে হবিগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন দেয় কেন্দ্র, আমরা শুধু তালিকা পাঠাই। সুতরাং মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই।

১৯৮৫ সাল থেকে হেরে চলেছেন তিনি

কাকাইলছেও ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান নূরুল হক ভূঁইয়া। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে মনোনয়ন পাওয়া মিসবাহ্ উদ্দিন ভূঁইয়া তারই ছোট ভাই।

ভোটের ময়দানে মিসবাহ পুরোনো মুখ। তবে ভোটাররা তাকে সেই আশির দশক থেকেই প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

মিসবাহ ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই সময় তিনি প্রয়াত হাফাই মিয়ার কাছে হেরে যান। ১৯৯০ সালেও হাফাইকে হারাতে পারেননি তিনি।

২০০৯ সালে হাফাই মিয়ার ভাতিজা প্রয়াত মোশারফ হোসেন মোহনের কাছেও হেরে যান তিনি। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও জামানত হারান। ২০১৮ সালে উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জিততে পারেননি।

তবে এবার তিনি জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত। বলেন, ‘এর আগে আমি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছি, সেটা ঠিক। তবে আমি কখনও কাকাইলছেও ইউনিয়নে পরাজিত হইনি। সুতরাং এবার আমার জয় নিশ্চিত।’

গত ২৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে মিসবাহ্ উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার বড় ভাই নূরুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন উপজেলার চারজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আজমিরীগঞ্জে নৌকা থেকে নামতে না দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে মিসবাহ্ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি করা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে বিব্রত করার জন্য একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেছে। ইতিমধ্যে অভিযোগটি খারিজ হয়ে গেছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত