জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

১৮ অক্টোবর, ২০২১ ১৬:১৬

নলুয়ার হাওরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকারের অভিযোগ

সুনামগঞ্জের জগন্নথপুরের নলুয়ার হাওরের বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাওরের কৃষকরা জগন্নাথপুরের ইউএনওর কাছে লিখিতভাবে এ অভিযোগ দিলে গতকাল রোববার উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে আটক করেন।

নলুয়ার হাওর পাড়ের ভূরাখালি, হালেয়া ও রাজনগর গ্রামের কৃষকদের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, নলুয়ার হাওরের ভূরাখালি রাখাল গাছের তলা থেকে হালেয়া পর্যন্ত বেড়িবাঁধে সম্প্রতি ভূরাখালি গ্রামের জহিরুল ইসলাম, রাজিব মিয়া,বাদশা মিয়া,সাইফুল মিয়া ও দুলু মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধের অংশ বিশেষ কেটে মাছ ধরছে।

এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে তারা গত এক সপ্তাহ ধরে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে মাছ শিকার করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১১ অক্টোবর ভূরাখালি, হালেয়া ও রাজনগর গ্রামের কৃষকরা জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন।

ভূরাখালি গ্রামের লাল মিয়া বলেন, নলুয়ার হাওরের ৮ নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে গত বছর ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে ভূরাখালি গ্রামের জহিরুল ইসলাম, নিয়ামুল হাসান রাজিব সহ কয়েকজন যুবক অবৈধভাবে জাল দিয়ে মাছ ধরছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নিষেধ দিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দোহাই দিয়ে মাছ ধরতে থাকে। তাই বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে লিখিতভাবে অবহিত করি।

হালেয়া গ্রামের কৃষক মোবারক মিয়া বলেন,আমরা হাওর পাড়ের মানুষ একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। বেড়িবাঁধ নির্মাণকালে মাটি সংকটে পড়তে হয়। ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নষ্ট করে মাছ ধরায় ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছি।

রাজনগর গ্রামের কৃষক ছাতির মিয়া বলেন, ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে অবৈধভাবে মাছ ধরার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা লিখিত অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম বলেন,আমি নিজে অন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি পিআইসির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। এখনো আমরা চূড়ান্ত বিল পাইনি। যে প্রকল্পের মাটি কেটে মাছ ধরা হচ্ছে সে প্রকল্পের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার দায়িত্বে থাকা মাঠ কর্মকর্তা হাসান গাজী বলেন, গত বছর ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দে রয়েল হাসান কে সভাপতি ও নিয়ামুল হাসান রাজিব কে সদস্য সচিব করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। বাঁধ কেটে মাছ ধরার বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জগন্নাথপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অনুপম দাস বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজন কে আটক করা হয়েছিল পরে মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি কে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত