নিজস্ব প্রতিবেদক:

২০ অক্টোবর, ২০২১ ০১:০৭

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী, ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাই

সিলেটে ইউপি নির্বাচন

কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া ও তার স্ত্রী সুলতানা আক্তার এবং দুই ভাই আলমগীর আলম ও মাসুক আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাঁচজন। এরমধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া ও তার স্ত্রী সুলতানা আক্তারের নামও রয়েছে।

এ উপজেলার ইসলামপুর পূর্ব ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলার খায়েরগাঁও গ্রামের আপন দুই ভাই আলমগীর আলম ও মাসুক আহমদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আলমগীর আলম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। একই পরিবার থেকে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার দুটি ঘটনা এখন উপজেলায় বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া টানা দুইবার তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হন। এবারও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

তবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তারা নির্বাচনে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেন না বলে জানান কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া।

তিনি জানান, ব্যাকআপ হিসেবে স্ত্রীকে প্রার্থী করিয়েছেন। এটা তার কৌশল। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। গতবার জেলে থাকা অবস্থায়ও জয় পেয়েছেন। মামলাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে যদি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়, সেজন্যই স্ত্রীকে ব্যাকআপ হিসেবে প্রার্থী করেছেন তার প্রার্থিতা টিকে গেলে স্ত্রী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।

অপরদিকে দুই ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারেও ‘ব্যাকআপ’ তত্ত্ব দিয়েছেন মাসুক আহমদ। তিনি জানান, তার ভাইয়ের কাগজপত্রে কোনো সমস্যা নেই। এরপরও ব্যাকআপ হিসেবে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। ভাইয়ের প্রার্থিতা টিকে গেলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেব। যেহেতু ভোটের মাঠে তাদের অবস্থান ভালো, তাই তারা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চান না।

এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য আলমগীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

পুরো বিষয়টিকে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির ‘বাজে উদাহরণ’ হিসেবে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক–সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি রীতিমতো অনৈতিক। যেকোনো মূল্যে হোক, ক্ষমতায় থাকতেই হবে—এমন মানসিকতা থেকেই স্বামী-স্ত্রী এবং আপন ভাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এটি দাপট ও ক্ষমতায়নের অসুস্থ প্রতিযোগিতা।’

সূত্র: প্রথম আলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত