ইয়াকুব শাহরিয়ার, শান্তিগঞ্জ

৩০ জুন, ২০২২ ১৬:০১

শান্তিগঞ্জ ফের বাড়ছে হাওর-নদীর পানি

প্রথম দফা বন্যার ভয়াবহতা কিংবা দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেনি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। কেমন ছিল সেই দুর্বিষহ স্মৃতি তা খাতা কলম কিংবা কী-বোর্ডের প্রতিটি বোতামে টিপে হয় তো লিখে রাখা যাবে না। সে স্মৃতি শুধু দুঃখের, শুধু অমানবিকতার। স্রোতের প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলা কিংবা হাওরিয়া ‘আফালে’র সামুদ্রিক ঢেউয়ে উপরে ফেলেছে মানুষের ঘর-বাড়ি, স্তব্ধ করে দিয়েছে স্বাভাবিক জীবন। যখন কমতে শুরু করেছিলো বানের পানি, তখন নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন এ উপজেলার মানুষজন। এখন সে স্বপ্নও ক্রমশ ফিকে হতে চলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৬ জুন বৃহস্পতিবার থেকে পাহাড়ি ঢল আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে উপজেলার বিভিন্ন হাওর, রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি তলিয়ে যায়। সৃষ্ট হয় বন্যার। ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নেয় বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। শুরু হয় মানবেতর জীবন যাপনের আর অমানবিকতার। এর পরে মঙ্গলবার (২১ জুন) থেকে কমতে শুরু করেছিলো পানি। বাঁচার স্বপ্ন দেখে মানুষ। ধীরে ধীরে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো ছেড়ে বাড়ি ফিরে কিছু পরিবার। এখনো কিছু পরিবার বাড়ি ফিরতে পারেননি। আবারো বাড়তে শুরু করেছে উপজেলার বিভিন্ন হাওর ও নদীর পানি। এতে শঙ্কা বেড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। শঙ্কিত হয়ে আর বাড়ি ফিরার কথাই চিন্তা করছেন না তারা। এছাড়াও যারা বাড়ি ফিরেছিলেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ পুনরায় ফিরে আসছেন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।

অজুদ মিয়া। বাড়ি পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে। পেশায় একজন রিকশা চালক। চার মেয়ে ও এক ছেলেসহ সাত জনের সংসার। ১৬ জুন রাতেই বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় তার ঘর। এর পরে আশ্রয় নেন পাগলা সরকারি মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজের আশ্রয় কেন্দ্রে। দু’চার দিনের মধ্যে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার পরিবারের। এখন আর সহসাই বাড়ি ফিরছেন না তিনি। পানি বৃদ্ধির কারণে তার ঘর পুনরায় তলিয়ে গেছে। এ দফা বন্যার পানি কমার পর হয় তো বাড়ি ফিরবেন তিনি।

জোবেদা বেগম নামের অপর এক বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছিলেন দরগাপাশা ইউনিয়নের আক্তাপাড়া মিনাবাজারের পশ্চিম পাশের ব্রিজের উপর। ঘরের পানি নেমে যাওয়ার পর নিজ বাড়িতেই ফিরেছিলেন তিনি। ঘর ডুবে যাওয়ায় আবার ফিরেছেন রাস্তায়।

পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের আবিজ নূর নামের একজন বলেন, পাখিমারা হাওরের পানি ক্রমশ বাড়ছে। আমাদের মনের ডর-ভয়ও বাড়ছে। এখন পানি বাড়লে আমাদের আর দশা থাকবে না। আল্লাহ্‌, আমাদের রক্ষা করুন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত