নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ আগস্ট, ২০২২ ১৩:৪৯

ওসমানী মেডিকেলে হামলা: আ. লীগ নেতার ভাতিজার আত্মসমর্পণ

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি ও দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি মো. আব্দুল্লাহ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

সোমবার (৮ আগস্ট) সকালে আদালতে তার আত্মসমর্পণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আজবাহার আলী। আব্দুল্লাহ (এ এইচ আব্দুল্লাহ) সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিসিকের ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল খালিকের ভাতিজা।

এর আগে হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি ও দুই শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আরও তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে মামলার আরও চার আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

প্রসঙ্গত, ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও এর আগের দিন দায়িত্ব পালনকালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হবার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

ঘটনার পর হামলায় জড়িত দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সেইসঙ্গে ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে হাসপাতাল ও কলেজ প্রশাসন দুটি মামলা করে। দুটি মামলায় এজাহারনামীয় আটজনকে আসামি করে অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে অভিযুক্ত রাখা হয়। হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ এবং মেডিক্যাল কলেজের পিএ-টু প্রিন্সিপাল ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহমুদুল রশিদ বাদী হয়ে আলাদা দুটি মামলা করেন।

দুই মামলার আসামিরা হলেন দিব্য, আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। আসামিদের সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে সাঈদ হাসান রাব্বি ও এহসান আহমদকে সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে গত মঙ্গলবার তাদের এসব দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে রাত ৩টার দিকে পরদিন বেলা ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। পরদিন দুপুরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ায় ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় এ ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভও শুরু করেন তারা।

পরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ প্রশাসন, কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসে তাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিলেও অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখে শিক্ষার্থীরা।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৩ আগস্ট) বেলা দেড়টা থেকে ফের আন্দোলনে নেমে সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সেসময় শুধু জরুরি ও হৃদরোগ বিভাগে সেবা অব্যাহত রাখা হয় বলে জানান আন্দোলনকারীরা।

পরে বুধবার মধ্যরাতে শাহপরান এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি দিব্য সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে বুধবার দুপুরে মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে বহির্বিভাগসহ হাসপাতালের সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ারও ঘোষণা দেন তারা।

বুধবার বিকেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত