কামরুল হাসান নোমান, জুড়ী:

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২০:৩৬

বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা আদায়: ঘটনাস্থল পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি

সিলেটটুডেতে সংবাদ প্রকাশ

ফুলতলা চা বাগানের আওতাধীন এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগানের মন্দিরের সামনে রাখা পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি। ছবি: সিলেটটুডে

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় পিডিবির আওতাধীন ফুলতলা চা বাগানের এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের ঘরে পল্লীবিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় এবং টেন্ডার ছাড়াই ঘটনাস্থলে পল্লীবিদ্যুতের খুঁটি পৌঁছার ঘটনা তদন্তে ২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিলেটটুডেতে ‘বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়ার নামে চা-শ্রমিকদের থেকে টাকা আদায়’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হলে পল্লীবিদ্যুৎ বিভাগ ও এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।

ওইদিন সকালে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের ডিজিএম (কারিগরি) মো. নজরুল ইসলাম মোল্লাকে প্রধান করে ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

কমিটির অপর সদস্য হলেন বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সহকারী প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন।

জানা যায়, ঘটনার শুরু প্রায় ৮ মাস আগে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের দিকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য টেন্ডার পেয়েছেন জানিয়ে এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ঠিকাদার আব্দুল মালেক, সুপারভাইজার দুলু মণ্ডল এবং স্থানীয় ইলেকট্রিশিয়ান শাহাজান আহমদ। বিদ্যুৎ সংযোগের বিনিময়ে ৩৫০ চা-শ্রমিকের প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা করে ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা নেওয়ার চুক্তি করেন তারা। চুক্তি অনুযায়ী চা-শ্রমিকেরা অগ্রিম কিছু টাকাও দেন। এরপর সেখানে পল্লী বিদ্যুতের ৩৬টি খুঁটি আসলেও ঠিকাদার কোনো কাজ করেননি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে চা-শ্রমিকেরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয় এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেন। এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগানের মন্দির এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের সেই ৩৬টি খুঁটি এখনো রয়েছে।

তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি জানিয়েছে, ফুলতলা চা বাগান ও এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগান পিডিবির আওতাধীন। এখানে কাজের জন্য পল্লী বিদ্যুতের কোনো টেন্ডারই হয়নি। ৩৬টি খুঁটি ঠিকাদার কিভাবে নিলেন তা তদন্ত করা হচ্ছে।

মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তার যোগসাজশে টেন্ডার ছাড়াই ঠিকাদার আব্দুল মালেক, সুপারভাইজার দুলু মণ্ডল ৩৬টি খুঁটি পিডিবির আওতাধীন ফুলতলা চা বাগানের এলবিন টিলা ফাঁড়ি চা বাগানে নিয়েছেন।

মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফুলতলা চা বাগান এলাকায় পিডিবির লাইন থাকায় পবিসের টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়নি। ঠিকাদার কিভাবে পল্লীবিদ্যুতের এতগুলো খুঁটি সেখানে নিয়ে রাখলেন, এর সাথে কারা জড়িত তা খোঁজে বের করতে সোমবার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ওইদিনই তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত