নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:০৮

গানের অনুষ্ঠানের কথা বলে দুই শিল্পীকে ধানক্ষেতে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’

সিলেটে গানের অনুষ্ঠানের নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দুই নারী বাউল শিল্পীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি করছে বলে ধর্ষিতা এক শিল্পীর মা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তুলেছেন।
 
গত ২ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে সিলেট মহানগরের জালালবাদ থানাধীন শিবেরবাজার এলাকার বাছনা বিলের ধান ক্ষেতে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ তার।

তবে পুলিশ বলছে- এ ঘটনায় দুই আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এ ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে ‘ধর্ষিতা’ এক নারীর (১৯) মা সংবাদ সম্মেলন করেন। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাউল শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট সিলেটের সভাপতি শাহ তোফাজ্জল ভান্ডারি।  

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- সংবাদ সম্মেলনকারী নারীর (৫৫) বিবাহিত মেয়ে (১৯) ও অপর একজন কিশোরী (১৫) পেশাদার বাউল শিল্পী। গত ৩১ অক্টোবর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার ইছাকলস গ্রামের মৃত শুকুর উদ্দিনের ছেলে মো. ফয়জুল হকের সঙ্গে ২ নভেম্বর কোম্পানীগঞ্জের পুটামারা গ্রামের ভানুদাসের বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনের জন্য বাউল শিল্পী পাঠানোর মৌখিত চুক্তি হয় ওই নারীর। ফয়জুলের কথামতো ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই নারী তার শিল্পী মেয়ে ও মেয়ের স্বামী এবং কিশোরী বাউল শিল্পীকে নিয়ে জালালাবাদ থানাধীন তেমুখী পয়েন্ট থেকে একটি প্রাইভেট কারযোগে গানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেন। এসময় প্রাইভেট কারের পাশাপাশি একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে অভিযুক্ত ফয়জুলের সঙ্গে তার ৭-৮ জন সঙ্গী ছিলেন।

পথিমধ্যে তারা শিল্পীদের গানের অনুষ্ঠানের দিকে না গিয়ে জালালাবাদ থানার শিবেরবাজার এলাকার বাছনা বিলের দিকে জোরপূর্বক নিয়ে যেতে থাকেন। শিল্পীরা এসময় পথ বদলের বিষয়টি জানতে চাইলে ভয় দেখানো হয় এবং অটোরিকশার যাত্রীরা নেমে অস্ত্রের মুখে শিল্পীদের টেনে-হেঁচড়ে নামিয়ে বাছনা বিলের ধান ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে দুই নারী শিল্পীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ফয়জুল ও তার সহযোগিরা। এসময় বিবাহিত নারী শিল্পীর স্বামী কৌশলে জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে জালালাবাদ থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ধর্ষিতাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

সংবাদ সম্মেলনে তোফাজ্জল ভান্ডারি আরও উল্লেখ করেন- এ ঘটনায় জালালাবাদ থানায় ৩ নভেম্বর ধর্ষিতা শিল্পীরা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার পর দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মাত্র দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফয়জুলকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ আরও তথ্য জানতে পারলেও অন্য আসামিদের ধরতে গড়িমসি করছে। এ বিষয়ে ধর্ষিতা শিল্পীরা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
 
তবে সংবাদ সম্মেলনে তোলা অভিযোগের বিষয়টি অমূলক দাবি করেছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে  বলেন- ঘটনার দিনই আমরা দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের ধরতে চেষ্টাও চালাচ্ছি। কোনো অভিযুক্তকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত