নিজস্ব প্রতিবেদক

০৪ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ১৩:২১

প্রস্তুত আওয়ামী লীগ-বিএনপির মঞ্চ

সিলেটে সমাবেশের জন্য মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ করছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুএকজন করে নেতাকর্মীরাও আসতে শুরু করেছেন সমাবেশস্থলে।

আজ দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ ও রেজিস্টারি মাঠে বিএনপি বিভাগী সমাবেশ করবে। বেলা ১২ টা ৫০ মিনিটে বিএনপির সমাবেশস্থলে ও ১টায় আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দু জায়গায়ই মঞ্চ প্রস্তুতের কািজ চলছে। ডেকোরেটার্সের কর্মীরা মঞ্চের ব্যানার ঠিকঠাক করছেন। মঞ্চ দুটির সামনেই স্তপ করে রাখা রয়েছে চেয়ার। মঞ্চ প্রস্তুতের পর মাঠে এই চেয়ারগুলো বিছানো হবে বলে জানান কর্মীরা।

শহীদ মিনারে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ তদারকি করছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত। তিনি বলেন, বেলা ৩ টায় আমাদের সমাবেশ শুরু হবে। সমাবেশের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক ইতোমধ্যে সিলেট এসে পৌচেছেন। সমাবেশ বিশেষ অতিথি থাকবেন দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক।


বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ দুপুর ২ টার পর শুরু হবে জানিয়ে দলটির সিলেট মহানগর কমিটির সদস্য সচিক মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, নামাজের পর থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হবেন। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা তাহসীনা রুশদীর লুনা, ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, যুগ্ন মহাসচিব হাবিব উিন নবী সুহেল, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানা যায়, প্রায় ৫ বছর পর পৃথক কর্মসূচী নিয়ে সিলেটের রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এরআগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মুখোমুখ হয় প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। ওই দিন খালেদা জিয়ার সাজার রায়কে কেন্দ্র করে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অনেকে। এরপর উভয় দল নানা ইস্যূতে রাজপথে সরব থাকলেও কখনো মুখোমুখি হয়নি।

তবে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী না থাকলেও গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে রাতে নগরের রিকাবীবাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাথে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

আজ শনিবার ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ ও ‘শান্তি সমাবেশে’-এর মাধ্যমে আবার রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। দীর্ঘদিন পর একইদিনে দুইদলের কর্মসূচীর কারণে সংঘাতের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। তবে দুপুর সোয়া একটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নগরে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।

‘আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেপ্ততারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে গত জানুয়ারিতেই সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

সমাবেশ সফলে এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটজুড়ে কর্মী সভা,পথসভা, জনসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের চেষ্টা করছেন তারা। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে দলটির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবরে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে একই দিনে সিলেটে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। প্রথমে এই সমাবেশ বিএনপির সমাবেশস্থল রেজিস্টারি মাঠে করার ঘোষণা দেয় দলটি। তবে পরে স্থান পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা ৩ টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। শান্তি সমাবেশ সফলেও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় দলটি।  

অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, নগরের সবগুলো মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরের প্রবেশপথগুলোতে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।  কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না যাতে ঘটে এ জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত