নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ জুন, ২০২৩ ২৩:৩৬

ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে জয় উৎসর্গ আনোয়ারুজ্জামানের

সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজের বিশাল জয়কে উৎসর্গ করেছেন ঐক্যবদ্ধ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগকে।

বিজয় শেষে ২১ জুন রাত ৯টার দিকে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নিজের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় তিনি তার নির্বাচনী প্রচারণায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে কাজ করায় স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়র আনোযারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নগর পিতা নয়, সেবক হিসাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমিও তা হতে চেয়েছি এবং আপনাদের কাছে এসেছি। সিলেটবাসী আমাকে যে ভালোবাসা জানিয়েছেন, আপন করে গ্রহণ করেছেন, সেই ঋণ জীবনে শোধ হওয়ার নয়। তবে আমি আমার উন্নয়ন তৎপরতা, সেবা আর ইশতেহার ঘোষিত ২১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করবো।

‘আমি আমার ইশতেহার শতভাগ না পারলেও অবশ্যই অন্তত ৯০ ভাগ বাস্তবায়ন করতে পারবো। তবে সেজন্য অবশ্যই সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ ও সহযোগীতা প্রয়োজন। আমি আপনাদের স্নেহ ভালোবাসা চাই। চাই আমাদের এই আধ্যাত্মিক পূণ্যভূমিকে একটি স্মার্ট ক্লিন ও তিলোত্তমা নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে। একাজে আমি আমার নেতৃৃবৃন্দের আন্তরিক সহযোগীতা চাই। তিনি তার উপর আস্তা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তার বোন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’

এছাড়াও তিনি সিলেটে আওয়ামী লীগের ঐক্যকে আরও দৃঢ় করতে এবং তা ধরে রাখতে কঠোর পরিশ্রম করার জন্য আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য জেবুন্নেসা হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওযামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ তাঁতীলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃৃষকলীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংঠনের নেতৃবৃন্দ, সিলেটের ৪ লাখ ৬৭ হাজার ভোটরসহ সর্বস্থরের জনসাধারণের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা জানান।

তিনি আরও বলেন, সিলেটবাসীর ভালোবাসার ঋণ শোধ হওয়ার নয়। কিন্তু তবু সবার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার ও চেষ্টা করে যাবো ইনশাল্লাহ।

প্রসঙ্গত, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়।

এবার মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৪ হাজার ৩৬০, নারী দুই লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৭ জন এবং ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন, ৪৬ শতাংশ ভোটার।

মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট পেয়েছেন।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের জাপার প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল পান ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট। সে হিসাবে বাবুলের চেয়ে ৬৯ হাজার ১২৯টি বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ার।

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়া মাহমুদুল হাসান ১৯০টি কেন্দ্রের সবগুলোতে প্রকাশিত ফলে পান ১২ হাজার ৭৯৪টি ভোট।

এছাড়া মেয়র পদে হরিণ প্রতীকে মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা পেয়েছেন ২ হাজার ৯৫৯ ভোট। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মো. আব্দুল হানিফ কুটু পেয়েছেন ৪ হাজার ২৯৬ ভোট। ক্রিকেট ব্যাট প্রতীকের প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন পেয়েছেন ২ হাজার ৬৪৮ ভোট। গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মো. জহিরুল আলম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪০৫ ভোট। বাস প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহাজান মিয়া পেয়েছেন ২৯ হাজার ৬৮৮ ভোট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত