কুলাউড়া প্রতিনিধি

১০ অক্টোবর, ২০১৬ ১৯:৫২

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কুলাউড়ায় হয়রানি ও অপপ্রচারের অভিযোগ

কুলাউড়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ আব্দুল মোনায়েম ছালেক কর্তৃক মো. নুরুল মোত্তাকিম চৌধুরী এবং তাঁর পরিবারকে হয়রানী ও অপপ্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হয়রানীর শিকার উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের পূর্ব মনসুর গ্রামের মো. নুরুল মোত্তাকিম চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফাতেহা বেগম চৌধুরী সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৪ টার দিকে পৌর শহরের স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মো. নুরুল মোত্তাকিম চৌধুরী জানান, উত্তরাধিকারী ওয়ারিশ সূত্রে তাঁদের (মোত্তাকিম চৌধুরীর) দাদি সেতারা বানু’র সম্পত্তির মালিক তাঁরা। কিন্তু একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী আব্দুল মোনায়েম ছালেক ও তাঁর চাচাতো ভাই আব্দুল মুনিম মজনু কর্তৃক তাদের সম্পত্তি দখল জবর দখল করে রেখেছেন। পরিকল্পিতভাবে তাদের (মো. নুরুল মোন্তাকিম চৌধুরী’র) সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য নানা পায়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। বৈধ কাগজপত্র না থাকা সত্ত্বেও আমাদের সম্পত্তি দখলের জন্য কৌশলে আমার বিরুদ্ধে গত জুন মাসে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন আব্দুল মোনায়েম ছালেক। মামলা করেও ক্ষান্ত হয়নি তাঁরা। উপরন্তু সম্পত্তির লোভে আমাদেরকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে হামলা, হয়রানী ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। চলতি বছরের ১১ জুলাই সোমবার প্রতিপক্ষ আব্দুল মোনায়েম ছালেক ও আব্দুল মুনিম মজনু আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে আমার স্ত্রী ফাতেহা বেগম চৌধুরীকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী বাদী হয়ে আব্দুল মোনায়েম ছালেক ও আব্দুল মুনিম মজনুকে বিবাদী করে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাগুলো চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও আব্দুল মোনায়েম ছালেক মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে ৭ অক্টোবর দৈনিক যুগান্তরে ‘কুলাউড়ায় প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে আমার কোন মন্তব্য না নিয়ে উল্টো মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ওই পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করেছেন। সংবাদে আমার বিরুদ্ধে স্ব-প্রণোদিত হয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা জন্য ওই প্রতিবেদক আমাকে মাদকসেবী, জুয়াড়ি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত বলে উল্লেখ করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অথচ আমার পিতা মৃত মাওলানা আক্তারুন নবী চৌধুরী অত্র এলাকার একটি মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন শিক্ষকতার পেশায় জড়িত ছিলেন। আমার বিরুদ্ধে প্রশাসন ও সমাজে এরকম কোন অভিযোগ নেই। আমাকে ও আমার পরিবারের ঐতিহ্যকে ক্ষুণ্ণ ও সম্পত্তি আত্মসাতের লক্ষ্যে ওই মহলটি অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

এছাড়াও প্রতিবেদনে ওই প্রতিবেদক বিজ্ঞ বিচারককে কটাক্ষ করে বলেন, বিচারক কোন তদন্ত না করে একপেশে রায় প্রদান করেন। কিন্তু তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ আছে, এস এ রেকর্ডের ভিত্তিতে মনসুর মৌজায় ৭৪৯নং খতিয়ানে হিস্যা মোতাবেক সেতারা বানু ০.৭৭ একর মালিক। সেতারা বানু’র মৃত্যুতে উত্তরাধীকারীসূত্রে তার সম্পত্তির ত্যাজ্যবিত্তে মালিক হন তাঁর দুই ছেলে মাওলানা আক্তারুন নবী চৌধুরী ও মো. আবুল কাশেম চৌধুরী। পরবর্তীতে তাদের মৃত্যুতে ওয়ারিশগন সম্পত্তির মালিক হন। কিন্তু উক্ত ভূমিতে বৈধ দখলদার নিরূপণ করা যায় নি। ফলে মো. মোত্তাকিম চৌধুরীকে বিষয়টির সমাধানের জন্য উপযুক্ত আদালতে শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। আর এই নির্দেশনা প্রদান করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। কোনরূপ তদন্ত ও বক্তব্য না নিয়ে একপেশে সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের অনুরোধও জানান মোত্তাকিম চৌধুরী।

কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, যেহেতু আমি বিষয়টি সম্পর্কে একটি নির্দেশনা দিয়েছি এরপরও কোন পক্ষ যদি চায় ওই নির্দেশনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন আদালতে আপিল করতে পারবেন এবং ওই বিজ্ঞ আদালত আমাকে যে নির্দেশনা দিবে আমি সেভাবেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত