নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০১:৪২

নোট অচলে বাধাগ্রস্ত ভারতীয় কয়লা আমদানি

সিলেটের বিভিন্ন শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা যেন কাটতেই চাইছে না। আদালতের নিষেধাজ্ঞায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে গত মাসে ফের শুরু হলেও এবার কয়লা আমদানির ওপর নেমে এসেছে ভারতীয় নোট অচলের খড়্গ।

ভারতে আচমকা ৫০০ ও ১ হাজার রুপির নোট অচলের ঘোষণায় প্রভাব পড়েছে সিলেটের বিভিন্ন শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানিতে। নোট অচলের পর থেকে প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে পণ্যটির আমদানি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সিলেটের আমদানিকারকরা।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে সিলেটের বিভিন্ন শুল্কস্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হয়। নানা ঘটনাপ্রবাহের পর আমদানি আবার শুরু হওয়ায় আশাবাদী হয়েছিলেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। শুল্কস্টেশনগুলোতেও ফিরেছিল কর্মচাঞ্চল্য। তবে সপ্তাহখানেক আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও ৮ নভেম্বর থেকে ভারত সরকার ৫০০ ও ১ হাজার রুপির নোট অচল ঘোষণা করায় আমদানির পরিমাণ কমতে থাকে। বর্তমানেও যত্সামান্য কয়লা আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

তামাবিল ও শেওলা শুল্কস্টেশন দিয়ে সর্বাধিক কয়লা আমদানি হয়ে থাকে। এ দুই শুল্কস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ৮ নভেম্বরের পর থেকে এখন পর্যন্ত দৈনিক গড়ে ২০০-৩০০ টন কয়লা আমদানি হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে এ দুই স্টেশন দিয়ে গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টন কয়লা আমদানি হয় বলে জানিয়েছেন তামাবিল কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি ফালাহউদ্দিন আলী আহমদ বলেন, বড় দুটি নোট অচল হওয়ায় রফতানিকারকরা কয়লা কিনতে পারছেন না। এমনকি এগুলো তামাবিল পর্যন্ত পাঠাতে যে খরচ হয়, সেটাই দিতে পারছেন না। ফলে একেবারে কমে এসেছে পণ্যটির আমদানি।

ভরা মৌসুমেও আমদানি করতে না পারায় আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, শীত মৌসুমে ইটভাটাগুলোয় উত্পাদন শুরু হয়। ফলে এ সময়ে কয়লার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এখন কয়লা আমদানি করতে না পারলে পরে আমদানি করে লাভ হবে না।

এদিকে কয়লা আমদানি কমলেও দাম বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ফালাহউদ্দিন আহমদ। বর্তমানে পণ্যটি প্রতি টন ৬৫ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।

এর আগে কয়লা উত্তোলন ও রফতানিতে ভারতের উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে চলতি বছরের ১৫ মে থেকে ভারতীয় কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপর রফতানিকারকরা আরো কিছু দিন কয়লা রফতানির জন্য সময় চাইলে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল তা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৭ সালের মে পর্যন্ত রফতানি নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। ফলে প্রায় পাঁচ মাস পর নভেম্বর থেকে আবার কয়লা আমদানি শুরু হয়।

জানা যায়, সিলেটের তামাবিল, বড়ছড়াসহ অন্তত পাঁচটি শুল্কস্টেশন দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। দেশের কয়লার চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানি হয় এসব শুল্কস্টেশন দিয়ে, যার পরিমাণ প্রায় ৩০ লাখ টন।
সূত্র : বণিক বার্তা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত