নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৩:০০

খাদিজার মঙ্গল হোক, আমার ফাঁসি হোক : আদালত চত্বরে বদরুল (ভিডিও)

আদালতে নেয়া হচ্ছে বদরুলকে

‘খাদিজার মঙ্গল হোক, আমার ফাঁসি হোক, খুশি হও সবাই’- রোববার সকালে আদালতে তোলার সময় চিৎকার করে একাধিবার এমন কথা বললেন বদরুল আলম। এরআগে ৫ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনে আদালত থেকে নেওয়ার সময় মিডিয়ার সামনে কথা বলার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন বদরুল। সেদিন সুযোগ না পেলেও রোববার কারাগারে তোলার সময় মিডিয়াকে দেখেই খাদিজার মঙ্গল আর নিজের ফাঁসি চেয়ে চিৎকার করতে থাকেন বদরুল।

রোববার সকালে কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার সাক্ষ্যগহণের জন্য সিলেট মহানগর মূখ্য হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে হাজির করা হয় বদরুল আলমকে। এদিন চাঞ্চল্যকর এই মামলার ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১৫ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত। পরবর্তী তারিখে খাদিজাকেও আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি এই মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী।

রোববার সকাল ১১ টা থেকে ২য় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এদিন  আদালতে খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া, মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা সহ ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান জানান, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় মোট সাক্ষী ৩৭ জন। এদের মধ্যে ৩২ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। ১৫ ডিসেম্বর বাকী ৫ জনকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, চিকিৎসকরা অনুমোদন করলে ওইদিন খাদিজাকেও আদালতে হাজির করতে বলেছেন আদালত। এছাড়া স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজার চিকিৎসা তত্ত্বাবধানকারী চিকিৎসককেও হাজির করতে বলা হয়েছে।

খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া বলেন, আদালত খাদিজাকে হাজির করতে সমন জারি করেছেন। আমরা চিকিৎসক ও আইনজীবীদের সাথে আলাপ করে এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করবো।

এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই মামলার ১৭ জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য দেন। তাদের মধ্যে এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, আহত অবস্থায় খাদিজাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কলেজ শিক্ষার্থী ইমরান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সেখান থেকে ৪ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এনে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠার পর সম্প্রতি স্কয়ার থেকে সিআরপিতে নেওয়া হয় খাদিজাকে।

হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলম আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। আদালতে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি। বদরুলের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। এ ঘটনায় ৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে। পরে স্থায়ী বহিষ্কার করে। খাদিজার বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার হাউসা গ্রামে। তাঁর বাবা মাসুক মিয়া সৌদিপ্রবাসী।

ভিডিও : আদালতে বদরুল

আপনার মন্তব্য

আলোচিত