নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:৫০

সিলেটে লন্ড্রি কর্মচারী সোহেল হত্যায় দুই জনের ফাঁসির আদেশ

সিলেটে লন্ড্রি কর্মচারী সোহেল আহমদ হত্যা মামলার রায়ে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড ও তাদের প্রত্যেকের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার সিলেটের বিশেষ দায়রা জজ (জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মো. মফিজুর রহমান ভূঞা এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলার ৭ নং মোঘলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁও গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে কাজল (২৩) ও একই এলাকার মনফর আলী ওরফে মনু মিয়ার ছেলে ইসলাম ওরফে ইসলাম উদ্দিন (২২)। দণ্ডপ্রাপ্তরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট নওসাদ আহমদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ মামলা থেকে সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাওনপুরের বদরুল (২৫), সদর উপজেলার মোঘলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁওয়ের কয়েছ (২২), একই এলাকার ছমরু মিয়া ওরফে আবু তাহের (২২), ময়না মিয়া (২২), হোসাইন ওরফে হোছন (২১), ছাইম উদ্দিন (২২) ও মানিক ওরফে আব্দুল মালিক (২৩)।

আদালত সূত্র জানায়, সদর উপজেলার বানাগাওয়ের মনফর আলীর মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা লন্ড্রি কর্মচারী সোহেল আহমদ (২৪)। কিন্তু এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি সোহেলের স্বমন্ধি ইসলাম।

২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল রাতের বেলা সোহেলকে শ্বশুরবাড়ি সিলেট সদর উপজেলার বানাগাঁও নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্থানীয় ঢালুয়াবন্দ হাওরে নিয়ে হত্যা করে ইসলাম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা। পরদিন পুলিশ সোহেলের মরদেহ হাওর থেকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সোহেলের পরিবার ওসমানী হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ এ ঘটনায় ওইদিন কাজল, ইসলাম উদ্দিন ও বদরুলকে গ্রেফতার করে।

পরে কাজলের তথ্য অনুযায়ী সোহেলের মস্তকটি একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার একদিন পর (১৯ এপ্রিল) ইসলাম ও তার বন্ধু কাজলসহ নয়জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সোহেলের বাবা জয়নাল আবেদীন।

এ মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় খুনের ঘটনায় নিজেদের জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় ইসলাম ও তার বন্ধু কাজল।

আদালতকে তারা জানান, বিয়ে মেনে নিতে না পারায় বাড়ির পাশ্ববর্তী হাওরে নিয়ে সোহেলকে হত্যার পর মস্তক বিচ্ছিন্ন করে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে তারা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই ) মো. আবদুর রহিম তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৬ জুন ইসলাম ও কাজলসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

২০১২ সালের ১৩ জুন থেকে এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু হয়। মামলায় ৩০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামি কাজল ও ইসলাম উদ্দিনকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০১/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের দু’জনকে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অপর সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট নওসাদ আহমদ চৌধুরী ও আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাহিদা চৌধুরী, অ্যাড. অশেষ কর ও অ্যাড. ফখরুল ইসলাম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত