মো. মুন্না মিয়া, জগন্নাথপুর

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০১:১৬

জগন্নাথপুরে ২৫টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি, শেষ পর্যায়ে প্রতিমা তৈরির কাজ

সনাতন ধর্মালম্বিদের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবার জগন্নাথপুরে ২৫টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার পৌর শহরসহ ৮টি ইউনিয়নে ২৩টিতে সার্বজনিন এবং ২টিতে পারিবারিকভাবে দুর্গোৎসব উদযাপন হবে। সব কয়টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হাতে তেমন সময় না থাকায় পূজারিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শারদীয় উৎসবের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি, উৎসবকে ঘিরে চলছে মন্দির ও মন্ডপে সাজ সজ্জার কাজ। শিল্পীদের নরম হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় খড় মাটি, পাট ও কাঁদায় তৈরি প্রতিমা গুলো উঠে দাঁড়াতে শুরু করেছে। শুধু বাকি পরিপাটি করে সাজানোর কাজ। এখন মূল কাঠামোয় দুর্গা মহিষাসুরের পাশাপাশি কার্তিক, গণেশ, লক্ষী ও সরস্বতি প্রতিমায় চলছে মাটির প্রলেপের কাজ। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রতিটি পুজা মন্ডপে সম্পন্ন হয়েছে প্রাথমিক সংস্কারের কাজ। চলছে বর্ণিল ডেকোরেশন ও আলোক সজ্জা।

হিন্দু শাস্ত্র মতে, দুর্গা দেবী এবার নৌকায় আসছেন।

পুজা উদযাপন পরিষদ জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সতীশ গোস্বামী ও সাধারণ সম্পাদক প্রণব বণিক জানান, প্রতি বছরের ন্যায় জগন্নাথপুরে দুর্গোৎসব উদযাপনে উপজেলার ২৫টি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সুষ্টু ও শান্তিপূর্নভাবে উৎসবটি উদযাপনে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানে উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছেন।

তারা জানান, হাওরের ফসল ডুবিতে এবং সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে এবার হাওর পাড়ের বাসিন্দাদের দুর্গোৎসব উদযাপনে মনে আনন্দ না থাকলেও দুর্গা দেবীর চরণ থেকে আশির্বাদ নিতে প্রস্তুতিতে রয়েছেন। হাওর পাড়ের বাসিন্দাদের দুর্গোৎসবে গরীব অসহায়দের ত্রান সহায়তা প্রদানে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য রনধীর কান্তি দাস নান্টু জানান, ভাটির জনপথ দাস নোয়াগাঁও, হরিনাকান্দিসহ ৩গ্রামের সার্বজনিন দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হলেও এবার ফসল ডুবির কারনে দুূর্গত এলাকায় উৎসবকে ঘীরে তেমন কোন আনন্দ দেখা যাবে না।

এদিকে উপজেলার জগন্নাথপুর পৌর সভায় ৩টি মন্ডপে সার্বজনিন এবং ২টি মন্ডপে পারিবারিকভাবে দুর্গোৎসবের আয়োজন ছাড়াও কলকলিয়া ইউনিয়নে ২টি, পাটলী ইউনিয়নে ১টি, মীরপুর ইউনিয়নে ১টি, চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নে ২টি, রানীগঞ্জ ইউনিয়নে ৫টি, সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নে ১টি, আশারকান্দি ইউনিয়নে ৪টি ও পাইলগাঁও ইউনিয়নে ৪টি মন্ডপসহ মোট ২৫টি মন্ডপে দূর্গোৎসব অনুষ্টিত হবে।

মন্ডপগুলো হচ্ছে- জগন্নাথপুর পৌরসভার জগন্নাথ জিউর আখড়া, দাস সম্প্রদায় সার্বজনিন পূজা মন্ডপ বাসুদেব বাড়ি, আনন্দময়ী সার্বজনিন পূজা মন্ডপ বাসুদেব বাড়ি, কলকলিয়া ইউনিয়নের কালিটেকী সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, কলকলিয়া দূর্গা বাড়ি সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, পাটলী ইউনিয়নের রসুলগঞ্জ বাজার সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, মীরপুর ইউনিয়নে বাউর কাপন সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নে গোপরাপুর গোপাল জিউর আখড়া সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, গয়াসপুর সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, রানীগঞ্জ ইউনিয়নে রানীগঞ্জ বাজার জগন্নাথ জিউর আখড়া সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, হিলালপুর সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, গোপালগঞ্জ বাজার সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, রৌয়াইল সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, হরিনাকান্দি সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের অনুচন্দ বুধরাইল সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, আশারকান্দি ইউনিয়নের শহীদ নগর সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, জয়দা সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, পাইকপাড়া সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, ছোট শেওড়া ও বড় শেওড়া সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, পাইলগাঁও ইউনিয়নে সাধু সাধক কেতকি দেবের বাড়ি সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, আলীপুর সার্বজনিন দূগা পূজা উদযাপন পরিষদ মন্ডপ, খানপুর সার্বজনিন পূজা মন্ডপ, সাধু সাধক রবি দেবের বাড়ি সার্বজনিন পূজা মন্ডপ এবং জগন্নাথপুর পৌরসভা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব’র মহাজন বাড়িতে পারিবারিক পূজা মন্ডপ ও শহরের পূর্ব ভবানীপুর ভটবাড়ি পূজা মন্ডপে পারিবারিকভাবে দূর্গোৎসব অনুষ্টিত হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, দুর্গোৎসব সুষ্টু ও শান্তিপূর্নভাবে সম্পন্ন করনের লক্ষে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

আগামী রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে আইন শৃংখলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষে ইতোমধ্যে আইন শৃংখলা রক্ষায় সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত