সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০১৭ ১৩:৩৬

সিলেটে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত

'যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আমাদের করণীয়' শীর্ষক গণশুনানি সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর একটি হোটেলে শনিবার বিকেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের যৌথ  আয়োজক ছিল গার্লস এডভোকেসী এলায়েন্স প্রকল্প এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, সহযোগিতায় ছিল প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

গার্লস এডভোকেসী এলায়েন্স প্রকল্পের বিভাগীয় সমন্বয়কারী আকলিমা চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সিলেট বিভাগীয় তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক জুলিয়া জেসমিন মিলি। প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সিলেট বিভাগীয় প্রধান এডভোকেট সৈয়দা শিরিন আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের অফিসার ইন চার্জ ফেরদৌসি শাহনাজ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ নারীমুক্তি সংসদ, সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি ইন্দ্রানী সেন শম্পা, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের উপ পরিদর্শক হাসিনা বেগম, উইমেন ওয়ার্ডস এর সম্পাদক অদিতি দাস, সিলেট প্রতিদিনের সম্পাদক আফজাল হুসেন সুহেল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে একটি সচেতনতামূলক ভিডিওচিত্র দেখানো হয়, যাতে সাইবার অপরাধের শিকার একটি মেয়ের ঘটনা তুলে ধরা হয়। ফেসবুকে বা কোনো গণমাধ্যমে কাউকে নিয়ে মানহানিকর বা বিভ্রান্তিমূলক কিছু পোস্ট করলে, ছবি বা ভিডিও আপলোড করলে, কারও নামে অ্যাকাউন্ট খুলে বিভ্রান্তমূলক পোস্ট দিলে, কোনো স্ট্যাটাস দিলে কিংবা শেয়ার বা লাইক দিলেও সাইবার অপরাধ হতে পারে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে নারীদের যৌন হয়রানির হার খুব বেশি এবং বিষয়টি দুঃখজনক। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে নারী-পুরুষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, মেয়েদের বা নারীদের উত্যক্ত করা, তাকিয়ে থাকা, ই-মেইল বা ফোনে বিরক্ত করা, এমনকি রাস্তায় অচেনা কাউকে ‘সুন্দরী’ বলা বা অশ্লীল কোন মন্তব্য করা, বিদ্বেষমূলক অঙ্গভঙ্গি করা, টিটকিরি, ব্যঙ্গবিদ্রূপ করা, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ ইশারা দেওয়া এসবই যৌন হয়রানির মধ্যে পড়ে। যৌন-হয়রানি রোধে উচ্চ আদালতের একটি নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু যৌন-হয়রানির কোনো আইন এখনো পর্যন্ত পাস হয়নি। ‘যৌন-হয়রানি প্রতিরোধ খসড়া আইন ২০১০’ তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়ায় কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে হয়রানির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জনসমাগম স্থলে নারী যৌন হয়রানির শিকার হয় সবচেয়ে বেশি। আর নিজ গৃহে যৌন হয়রানির ঘটনা অহরহ ঘটছে।

বক্তারা বলেন, যখনই কোন মেয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সে তা চেপে যায়।কারণ যৌন হয়রানির শিকার হওয়া মেয়েটি বা নারীকেই নানাভাবে দোষারোপ করা হয়। তাছাড়া কোথায় বা কিভাবে অভিযোগ দায়ের করবে, এই বিষয়টাও অনেকেই জানেননা। দেশে গ্রাম আদালত রয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়নে সেবা কেন্দ্র বা সিটিজেন চার্টার রয়েছে। জনগণের জন্য রয়েছে তথ্য অধিকার আইন। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে কি ধরণের সেবা পাওয়া যায় সে বিষয়েও অনুষ্ঠানে আলোকপাত করা হয়।

অনুষ্ঠানে আগত নারীরা তাদের জীবনে বা পরিচিত কারো জীবনে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির ঘটনা তুলে ধরেন এবং এ সংক্রান্ত প্রশ্নও তুলে ধরেন। বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহে অবস্থিত ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলে ধরেন এক নারী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত