নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:৫১

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নগরবাসী, ওষুধ সঙ্কটে ব্যাহত মশা নিধন কার্যক্রম

শীত মৌসুম আসার আগেই নগরে বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) কর্তৃপক্ষ এখনও শুরু করেনি মশা নিধন কার্যক্রম। ওষুধ সঙ্কটের কারণে মশা নিধন কার্যক্রম শুরুতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সিলেট নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে শীত মৌসুমে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ৩ হাজার লিটার ওষুধ। তবে সিসিকে বর্তমানে মজুত রয়েছে মাত্র ৪০ লিটার।  

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আবার মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত মশার প্রজনন হয়। এ সময়ে মশা মারার ওষুধের প্রয়োজন পড়ে। অথচ নভেম্বর মাস চলে যেতে শুরু করলেও সিটি কর্তৃপক্ষ ওষুধই ছিটাতে পারেনি। ওষুধ সঙ্কটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে মশা নিধন কার্যক্রম।

সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখা থেকে জানা গেছে, ওষুধ কেনার জন্য প্রায় তিন মাস আগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ দরপত্রের মাধ্যমে ১ হাজার ৩০০ লিটার ওষুধ কেনা হবে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ ওষুধ কিনতে মাসখানেক সময় লেগে যাওয়ার কথা। এ ওষুধ ছিটানোর পর পুনরায় চাহিদা অনুযায়ী আরও ওষুধ কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। তবে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দরপত্রের বাইরে ৪ লাখ টাকার ওষুধ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, ৪০ লিটার মজুত থাকায় কোথাও মশা মারার ওষুধ ছিটানো হয়নি। আরও কিছু ওষুধ ক্রয়ের পর একযোগে ওয়ার্ডগুলোতে ওষুধ ছিটানো হবে। এ ছাড়া আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মশার প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে নালা-নর্দমাগুলো পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করা হবে।

নগরের ১৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, রাতে এমনকি দিনেও মশার উপদ্রবে বাসায় থাকা দায়। কয়েল জ্বালিয়েও মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। অথচ এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের কোনো উদ্যোগ নেই।

তিনি বলেন, নগরীর ড্রেনগুলো আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে গেছে। শীত মৌসুমের শুরুতে মশা নিধনের ওষুধ না ছিটানোয় মশা নির্বিঘ্নে বংশবিস্তার করছে। অথচ শীত মৌসুমের শুরুতেই মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর কথা।

মশার উপদ্রবে কারণে দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি অনেকে রোগাক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

নগরের একাধিক বাসিন্দারা জানান, ওষুধ ছিটানো তো দূরে থাক, এলাকার নালা-নর্দমাগুলোও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক খাল অপরিচ্ছন্ন থাকায় সেগুলো মশার প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এতে করে এলাকায় মশার বংশবিস্তার ঘটছে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, মশার উপদ্রব হুট করে কিছুদিনের মধ্যে বেড়ে গেছে। কর্পোরেশনের কাছে মশা মারার ওষুধের মজুত কম থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ৪ লাখ টাকার ওষুধ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব ওষুধ কয়েক দিনের মধ্যেই ছিটানো হবে। এ ছাড়া মাসখানেকের মধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে আরও ৩৫ লাখ টাকার ওষুধ কেনা হবে। তখন নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ছিটানো হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত