সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০১৮ ০০:৪২

মুহিতের ডাক নাম ‘শিশু’, জানালেন মোমেন

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ডাক নাম শিশু, আর সেকারণে হয়ত তার মধ্যে এখনও শিশুচরিত্রও লক্ষণীয়- এমন মন্তব্য করেছেন তার ছোট ভাই ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন। জানালেন বড় ভাইয়ের স্পষ্টবাদিতার কথা; বললেন, তিনি (মুহিত) কারও পেছনে কোনো কথা বলেন না, যা বলেন সামনাসামনি বলেন।

রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আব্দুল মোমেন এসব তথ্য জানান। বারডেমের এই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনীতি ও সমাজসেবায় অবদানের জন্য ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্মৃতিপদক দেওয়া হয় আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। এছাড়া হৃদরোগ চিকিৎসা ও ডায়াবেটিক রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় এ পদক দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. আব্দুল মালিক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সায়েন্সের ইমেরিটাস অধ্যাপক হাজেরা মাহতাবকে।

ড. মোমেন কথা বলেন আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘রাবিশ’ শব্দ ব্যবহার নিয়েও। জানালেন, আওয়ামী লীগে যোগদানের প্রস্তাবেও নাকি ‘রাবিশ’ শব্দ উচ্চারণে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মুহিত। সেই ঘটনা সম্পর্কে জানালেন, “প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে বললেন, মুহিত সাহেবকে আওয়ামী লীগে যোগদানের প্রস্তাব দিতে। আমি তাকে বললাম, আমার কথা তো সে শুনবে না। আপনি বলেন। কিন্তু নেত্রী আমাকেই বলতে বললেন।

“আমি তাকে বললাম আওয়ামী লীগে যোগ দিতে। তিনি সাথে সাথে এটাকে ‘রাবিশ’ বলে ফেলে দিলেন। বললেন, ‘নো’।”

মোমেন বলেন, “১৯৯২, ৯৩ সালের দিকে তিনি লিখেছিলেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কী ধরনের হবে, কী ধরনের গুচ্ছ গ্রাম তৈরি হবে- এগুলো অত্যন্ত নিখুঁতভাবে তিনি তুলে ধরেছিলেন।

“আমি তখন তাকে বললাম, ‘তুমি একটা রাজনৈতিক চরিত্র, তোমার আওয়ামী লীগে যাওয়া উচিত, এটাতে জয়েন করা উচিত। কনটেস্ট করা উচিত।

“প্রথমে তিনি রাগ করলেন, কিন্তু নানাভাবে আমি ‘পুল’ সৃষ্টি করলাম। ভাইবোন, বন্ধু-বান্ধব সবাই যখন বলল, তখন তিনি রাজি হলেন।”

বড় ভাইয়ের প্রশংসা করে মোমেন বলেন, “আমাদের অর্থমন্ত্রী যেটা স্বপ্ন দেখেন, সেটার জন্য গভীরভাবে কাজ করেন এবং এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটার সাথে লেগে থাকেন।”

তিনি বলেন, “উন্নয়নে অর্থমন্ত্রীর মতো এমন একজন হাতিয়ারকে পাওয়ার কারণে আমরা তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে মডেল ইকোনোমি হিসেবে বিকশিত হয়েছি। তার চরিত্র, তার কর্মপ্রবাহ অনুকরণীয়। আমার ধারণা, তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করলে আমাদের দেশ খুব শিগগিরই সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হবে।”

উল্লেখ্য, বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন মুহিত। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে কয়েক দশক তৎকালীন পাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮২-৮৩ সালে তৎকালীন এরশাদ সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মুহিত। ২০০১ সালে নিজের এলাকা সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান তিনি। এরপর ২০০৮ সালে সেখান থেকেই ভোটে জিতে আসেন সংসদে, নেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরও তাকে অর্থমন্ত্রী করেন শেখ হাসিনা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত