নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ আগস্ট, ২০১৮ ১৪:৫৩

সিলেটে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক চামড়া সংগ্রহ, লোকসানের আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের

সিলেটে চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি ব্যবসায়ীদের। পুঁজির সঙ্কট ও বকেয়া টাকা আটকে যাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক চামড়াও সংগ্রহ করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। আর যে পরিমাণ চামড়া কিনেছেন তার দাম কম হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

সিলেট শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ জানান, এবার সিলেটে এক লাখ পিস পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সংগ্রহ করা গেছে মাত্র ৪৫ থেকে ৫০ হাজার পিস চামড়া।

তিনি জানান, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার মূল কারণই হচ্ছে পুঁজির সংকট। একদিকে ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা নেই। অন্যদিকে চার বছর ধরে আড়তদার আর ট্যানারি মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনা রয়েছে। কিন্তু এবার মাত্র ২৫ শতাংশ পাওনা আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে  বিক্রেতারা জানিয়েছেন কোরবানির পশুর চামড়া সিলেটে এ বছর গতবারের চেয়ে অর্ধেকেরও কম দামে কেনাবেচা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের কথার সাথে মিল রেখে দয়ামীর দারুল কোরআন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোশাহিদ আলী বলেন, সিলেটে এ বছর পানির দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। গত বছরও যে চামড়া ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, এ বছর তার অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসায় অনুদান হিসেবে পাওয়া চার শতাধিক চামড়া দুইশ-আড়াশ টাকায় বিক্রি করেছি। সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় কয়েকটা চামড়া বিক্রি করতে পেরেছি। গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে এত কম দাম দেখিনি।

নগরী ঘুরে দেখা গেছে, ফুট হিসেবে নয়, মৌসুমি ক্রেতারা চামড়া কিনছেন আকার ভেদে। প্রতিটি গরুর চামড়া ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকায় কিনেছেন তারা।

কয়েক বছর ধরে চামড়া ব্যবসায়ীদের দুর্দিন চলছে বলে জানিয়ে সমিতির সহ-সভাপতি শাহিন আহমদ বলেন, সিলেটের তিন শতাধিক চামড়া ব্যবসায়ীর মধ্যে বেশির ভাগই এ বছর ক্ষতির আশঙ্কায় চামড়া কেনেননি। এই সুযোগে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কম দামে চামড়া কিনে নিয়েছেন। কম দামে কিনলেও তারা লাভ করতে পারবেন তা এখনও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

এদিকে নগরীর ঝলোপাড়া এলাকায় চামড়া পল্লীতে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকরা চামড়া প্রক্রিয়াজাত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চামড়া ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিয়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে রাখলেও শ্রমিক খরচসহ আনুষাঙ্গিক সব খরচ শেষে লাভের মুখ দেখা নিয়ে সংশয়ে আছেন তারা।

চামড়া ব্যবসায়ী আজাদ বলেন, আড়তদারদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা চাইলে তারা নানা অজুহাত দেখান। এবার সামান্য টাকা পাওয়া গেছে। ব্যাংক ঋণ ও ধার-দেনার টাকায় কিছু চামড়া সংগ্রহ করেছি। কী করবো ব্যবসাটাতো টিকিয়ে রাখতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত