সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৪ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৭:৫৫

স্থাপনা অপসারণ করে সুনামগঞ্জ পিটিআই বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবি

সুনামগঞ্জ বধ্যভূমির উপর প্রাইমারী ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (পি.টি.আই) এর সুপারিন্টেন্ডের বাস ভবন ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের টিনসেট পরিদর্শন বাংলা অপসারণ করে প্রকৃত বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে।

সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের সাবেক সদস্য-সচিব মালেক হুসেন পীর জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া পৃথকভাবে সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সমূহ সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক, সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও পি.টি.আই স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন।

মালেক হুসেন পীর তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে পিটিআই বদ্ধভূমিতে মাটি চাপা দিয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার বধ্যভূমি ও মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণের আওতায় সুনামগঞ্জ শহরের পি.টি.আই এর বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু সুনামগঞ্জ শহরের পি.টি.আই টি বধ্যভূমি উপরে প্রশাসনিক ভবন ও পশ্চিম সীমানায় নির্মাণ করা সড়ক ও জনপথের পরিদর্শন বাংলা অপসারণ করা হয়নি। এতে প্রকৃত বধ্যভূমি সংরক্ষণ হবে না। পি.টি.আই এর ভূমির দক্ষিণে স্বাধীনতার পূর্বে বা পরে কোন বাসা বাড়ী বা স্থাপনা ছিল না।

তিনি আরো বলেন,‘ পি.টি.আই স্থাপিত হওয়ার সময় এর পূর্বে ও দক্ষিণে কোন স্থাপনা ছিল না। পরবর্তীতে দক্ষিণ দিকে জজ কোর্ট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় স্থাপিত হয়। পি.টি.আই এর পশ্চিম পার্শ্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খাল ভরাট করে একটি টিনসেট পরিদর্শন বাংলা নির্মাণ করা হয়। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের মদদে বধ্যভূমি নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে বধ্যভূমির উপর পি.টি.আই এর সুপারিনটেন্ডেন্টের বাস ভবন নির্মান করা হয়। স্বাধীনতা বিরোধিচক্র পরিকল্পিতভাবে বধ্যভূমির চিহ্ন মুছিয়া ফেলার উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণ করলেও কোন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার কোন সময় থাকেননি। যার ফলে উক্ত ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় পিটিআই বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় এবং প্রকৃত স্থান চিহ্নিত না করেই বধ্যভূমির পার্শ্ববর্তী ভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ নেয়া হয়। এতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির ইন্ধন রয়েছে।

মালেক হুসেন পীর আবেদনে উল্লেখ করেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের লক্ষ্যে সুনামগঞ্জ পি.টি.আই’র বধ্যভূমির সঠিক স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়। না হলে বধ্যভূমির স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত হবে না এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধের ইতিহাস জানা থেকে নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হবে।

এছাড়াও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য এবং সর্ব সাধারণের দৃষ্টি গোচরে থাকার জন্য সওজের টিনসেট পরিদর্শন বাংলা অপসারণ করা প্রয়োজন বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত