রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং

১০ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:২২

আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ উধাও

বানিয়াচংয়ের পল্লী বিদ্যুৎ

আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। আর সামান্য ঝড়-বৃষ্টি হলে তো কোনো কথাই নেই। তখন এই বিদ্যুতের তাঁর ছিড়ে নয়তো লাইনের উপর গাছগাছালি পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। নতুবা ত্রুটি দেখা দেয় ৩৩ কেভি লাইনে। এই হলো হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের নিত্যদিনের চিত্র।

বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকেই উপজেলাবাসী এমনই দুর্ভোগে ভুগছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই পল্লীবিদ্যুতের এই লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছেন গ্রাহকরা।  লোডশেডিংয়ের ফলে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সেচের চাষীরা, তেমনি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রাহক ও শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। দিনে অন্তত: ১৮ থেকে ২০ বার পল্লীবিদ্যুতের এই লোডশেডিং চলছে।  বৈশাখের ঝড়বৃষ্টির দাপট শুরুর আগেই বিদ্যুতেই এই আসা যাওয়া যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মোস্তাকিম নামে পল্লীবিদ্যুতের এক গ্রাহক বলেন, পল্লীবিদ্যুৎ অপরিকল্পিত ভাবে তাদের সঞ্চালন লাইন টেনেছে। যার মাসুল এখন গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী করলে এই লোডশেডিং হত না।

গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের তাঁরের টেম্পার নেই। বেশির ভাগ খুঁটিও দুর্বল। হালকা বাতাস এলেই তাঁর ছিড়ে অথবা খুঁটি পড়ে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় জোড়াতালি দিয়েই কোনো মতে চালানো হচ্ছে বানিয়াচংয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহর কার্যক্রম। আকাশে সামান্য মেঘ জমলেই এবং মাঝারি বেগে হাওয়া ও টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হলেই বানিয়াচংয়ে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা আতঙ্কে ভূগেন- এই বুঝি বিদ্যুৎ উধাও হয়ে গেল। আর একবার গেলে ঘন্ট থেকে দুই ঘন্টার মধ্যে ফিরে আসে না। এমনকি মসজিদে আজান শুরুর মধ্যেই হঠাৎ করে চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ।

বিদ্যুতের এই আসা যাওয়ার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলা সদরের বিদ্যুতের গ্রাহক ব্যবসায়ী রবিউল আলম জানান, একটু দমকা বাতাস বইলে বিদ্যুৎ থাকে না। সঙ্গে প্রতিদিনের দীর্ঘ লোডশেডিংতো আছেই। তাছাড়া নানা অজুহাতে প্রায় সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ঠিকমতো ব্যবসা বাণিজ্যও করা যাচ্ছে না। চলমান এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও পড়ালেখায় নানা ব্যাঘাত ঘটছে।

এ বিষয়ে বানিয়াচং পল্লীবিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন- বর্তমানে এই এলাকায় গ্রাহকের সংখ্যা বাড়ায় ট্রিপল সার্কিট লাইন স্থাপনের কাজ চলমান। অন্যদিকে ধুলিয়াখালে নতুন একটি সাব-স্টেশন নির্মাণ করায় কয়েকদিন যাবত লোডশেডিং হচ্ছে। এর কাজ শেষ হতে আরো ৬ থেকে ৮দিন লাগতে পারে। আশা করছি এর পর থেকে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হবে না। এই এরিয়ায় বিদ্যুতের চাহিদার কোনো ধরণের ঘাটতি নাই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত