১৭ জুন, ২০১৯ ১৩:৪২
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের সরকারি ভাতা দেওয়া হয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক আমুরোড শাখায়। শুধু চুনারুঘাট শহর নয় আশপাশের পাহাড়ি এলাকা সহ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূর থেকেও এ ভাতা নিতে আসেন গ্রাহকরা। ভাতা গ্রহীতার মধ্যে কেউ কেউ একেবারে দৃষ্টিহীন, অচল, শত বছর ঊর্ধ্ব বয়সী। প্রতি বারই ভাতা নিতে এসে ব্যাংক স্টাফদের গাফিলতির শিকার হয়ে সারা দিন বসে থেকে বেলা শেষে খালী হাতে ফিরে যেতে হয় তাদের। গত কয়েক বছর ধরেই এ ভোগান্তির মধ্য দিয়ে ভাতা গ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বেশ কয়েকজন ভাতা গ্রহীতা জানান, সকাল নয়টা থেকে দশটার মধ্যে এসে ব্যাংকে হাজির হলেও ভাতার টাকা দেওয়া শুরু হয় দুপুরের পর থেকে। অফিস টাইম পার হয়ে গেলে বাকীদের বলা হয় পরদিন আসতে। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাকে লাঞ্ছিত হতে হয় স্থানীয় এক কর্মকর্তা দ্বারা। এ কর্মকর্তাকে একশো টাকা দিলে তিনি ভাতার টাকা আগে পাইয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করেন।
এ নিয়ে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও এই ভোগান্তি নিয়ে প্রতিবাদ জানান চুনারুঘাটের সচেতন মহল। এত সবের পরও নিজেদের মত করেই কার্যক্রম অব্যাহত রাখে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে গাজীপুর ও আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবা ভাতা নিতে আসা বেশ কয়েকজন মহিলা বলেন, দুর-দূরান্ত থেকে অসুখ-বিসুখ নিয়ে ভাতা নিতে আসি। আমাদেরকে যেন এককালীন ভাতার জন্য দুই-তিন বার না আসতে হয় সে ব্যবস্থা করা হউক। পাশাপাশি স্থানীয় কর্মকর্তার কাছ থেকে সুন্দর ব্যবহার পাওয়ার দাবি করেন তারা।
এই ভোগান্তির কথা চুনারুঘাট উপজেলার ২নং আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবেদ হাসনাত চৌধুরী সনজুকে অবগত করেন একাধিক ভুক্তভোগী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে রোববার (১৬ জুন) বেলা আড়াইটায় সরেজমিনে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে যান চেয়ারম্যান সনজু চৌধুরী।
চেয়ারম্যান আবেদ হাসনাত চৌধুরী সাজু বলেন, আমি যখন গিয়েছি তখন অফিস টাইম শেষ হতে বাকী মাত্র দেড় ঘণ্টা। তখনও ভাতা দেওয়া হয়েছে তিন ভাগের এক ভাগ মানুষকে। ভাতা গ্রহীতাদের কথাবার্তা শুনে ও নিজ চোখে তাদের বিড়ম্বনা দেখে আমি ব্যাংকের ম্যানেজারের কাছে এ ভোগান্তির কারণ জানতে চাই। তখন ম্যানেজার নিজে কোনো উত্তর না দিয়ে আবুল কালাম নামের স্থানীয় একজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে দেন। আবুল কালাম নিজেদের গাফিলতির কথা শিকার না করে উল্টো ভাতা গ্রহীতাদের দোষারোপ করার চেষ্টা করেন। তার এই কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ হয়ে উপস্থিত জনগণকে সাথে নিয়ে এর জোরালো প্রতিবাদ করি। ভবিষ্যতে এমন করলে এর জন্য আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দীন ইকবাল বলেন, প্রতিবন্ধী, বিধবা ও বয়স্কদের বিড়ম্বনা মেনে নেওয়ার নয়। অচিরেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মন্তব্য