নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০১:১১

ঈদের ছুটির পর সিলেটে ফের বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

সিলেটে ঈদের ছুটির পর আবার বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু রোগী। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ জন। আর ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের পর থেকে সিলেটে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক কমেছে। ডেঙ্গুর জন্য আগামী এক সপ্তাহ সময় ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা মানুষজনের মাধ্যমে সিলেটে ডেঙ্গু আরও মারাত্মক রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ছিল স্বাস্থ্য বিভাগের। তাই সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে ঈদ পরবর্তী ডেঙ্গুর ভয়াবহ আকারে না ছাড়ানোর কারণে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন সেক্টরের প্রধানরা।

সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ১৩ জন, সুনামগঞ্জ জেলায় ২ জন, মৌলভীবাজার জেলায় ১ জন ও সিলেট জেলায় ৩ জন রোগী।

সিলেট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৪১০ জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সিলেটে এখনো কেউ মারা যাননি। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট জেলায় ১৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ১৩ জন ও প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ জন।

সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. দেবপদ রায় বলেন, ঈদ পরবর্তী ডেঙ্গু রোগী বাড়ার যে আশঙ্কা ছিল সেটা আর নেই। কারণ ঈদের পর অনেক কম সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টার রোগী ভর্তির সংখ্যা দেখে বোঝা যায় ডেঙ্গু সিলেট বিভাগে ভয়াবহতা ছড়াতে পারেনি। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র জনসচেতনতার জন্য।

তিনি বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা জনসাধারণকে সচেতন হতে আহবান জানিয়েছি। স্থানীয় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছেন। তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন জেলা ভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান করেছে। এসব অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। যার ফলে সিলেটে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও ভালোভাবে প্রজনন করতে পারেনি। তাই এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। বৃষ্টির পানি যেনো কোথাও জমে না থাকে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে।

এ ব্যাপারে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি বিপদজনক তাই সিলেটে এডিস মশার লার্ভা ও এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়ার পর অনেক শঙ্কায় ছিলাম আমরা। এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করার জন্য স্থানীয় জনগণকে নানা ভাবে সচেতন করেছি আমরা। পোস্টারিং, মাইকিং, সভাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সিলেটবাসীকে সচেতন করা হয়েছে। যার ফলে সিলেটে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পরতে পারেনি।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন সিলেটে। ঈদের আগের দিন থেকে গত ২ দিন পর্যন্ত প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ৮ থেকে ৯ জন জন রোগী ভর্তি হন। সিলেটে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে, তাই অনেকটা স্বস্তি বোধ করছি। তবে যেহেতু প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে তাই সবাইকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। বৃষ্টির জমা পানি অবশ্যই পরিষ্কার করতে হবে। কারণ জমে থাকা পানিতে এডিস মশার প্রজনন হয়। তাই সব সময় এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত