কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

৩১ আগস্ট, ২০১৯ ২০:২২

কমলগঞ্জে প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কলেজ ছাত্রীকে নির্যাতন

প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক বখাটে ছেলের হামলায় আহত হয়েছেন কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার হাই স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী। টিলাগড় গ্রামের নিজ বাড়ির অদূরে রাস্তা গতিরোধ করে তাকে নির্যাতন করা হয় বলে জানা যায়।

শনিবার (৩১ আগস্ট) বেলা পৌনে ৩ টায় পতনঊষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য টিলাগড় মসজিদের পাশে এই হামলা চালানো হয়।

যৌন হয়রানি, টানা হেঁচড়ার পর রাস্তায় ফেলে ছাত্রীর বুকের উপর উঠে ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টাকালে সহপাঠীদের চিৎকারে আত্মরক্ষা পায়।

কলেজ শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে টিলাগড় গ্রামের ওই কলেজ ছাত্রী তার সহপাঠীসহ তিন শিক্ষার্থী টিলাগড় মসজিদের পাশ দিয়ে আসছিল। আসার সাথে সাথেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে টিলাগড় গ্রামের মিলন খানের ছেলে সাইফুল খান (২৩) রাস্তা গতিরোধ করে। প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় প্রকাশ্যে টানা হেঁচড়া করে মাটিতে ফেলে দেয় ওই ছাত্রীকে।  ওই ছাত্রীর বুকের উপর উঠে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। বখাটের টানাহেঁচড়ায় বিউটির মাথা ও পায়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের চিৎকারে তার গলার স্বর্ণের চেইন, ঘড়ি, নাকফুল, কানের দুল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।

নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর বাবা ও সাবেক ইউপি সদস্য ওয়াজিদ আলী জানান, বিষয়টি কলেজ শিক্ষক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় মেয়ের শারীরিক অবস্থা কিছুটা অবনতি হয়েছে। সন্ধ্যায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হচ্ছে বলে তিনি তারা।
    
ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার বিকাল ৫ টায় পতনঊষার স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান তওফিক আহমদ বাবু, কলেজ অধ্যক্ষ মো. ফয়েজ আহমদ, শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই আনজির আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও কলেজ ছাত্রীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পতনঊষার স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি তওফিক আহমদ বাবু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এর আগেও বখাটে ওই ছেলের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে এবং এ ঘটনায় কোন ছাড় দেওয়া হবে না।

অভিযুক্ত বখাটে সাইফুল খানের পিতা মিলন খান ছাত্রীর উপর হামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ছেলের যন্ত্রণায় আমি নিজেই অতিষ্ঠ। গত ঈদের দিনে সে তার মাকেও মারধোর করেছে। তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত।

শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনজির আহমদ বলেন, কলেজ ছাত্রীর উপর হামলাকারী ছেলে খুবই খারাপ। ছেলের বাবার বিরুদ্ধেও আগে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং মেয়ের বক্তব্য গ্রহণ করেছি। ছেলেকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ দেয়ার পর আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।  

কমলগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমি শোনার সাথে সাথে কমলগঞ্জ থানার ওসিকে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত