ওসমানীনগর প্রতিনিধি

২৯ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:৪৪

ওসমানীনগরে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ, স্বামী-শ্বশুর আটক

সিলেটের ওসমানীনগরে মায়া বেগম (২৫) নামের নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামের গৃহবধূর স্বামীর বসতঘর থেকে লাশ উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।

নিহত মায়া বেগম উপজেলার কাদিপুর গ্রামের সজ্জাদ মিয়ার (৩৫) স্ত্রী ও জগন্নাথপুর উপজেলার জয়দা গ্রামের আনা মিয়ার মেয়ে।

পুলিশ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত মায়া বেগমের স্বামী উপজেলার তাজপুর ইউপির কাদিপুর গ্রামের সজ্জাদ মিয়া ও তার বাবা নজির মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও নিহত গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে মায়া বেগমের স্বামীর বাড়ি থেকে ফোনে নিহতের পিতা ও মামার বাড়িতে জানানো হয় দ্রুত কাদিপুর মায়ার শ্বশুর বাড়িতে আসার জন্য। খবর পেয়ে মায়া বেগমের স্বজনরা মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মায়া বেগমের নিথর দেহ মাটিতে নিলডাউন অবস্থায় ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দেয়া দেখতে পান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মায়া বেগমের পিতার পরিবার ওসমানীনগর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধু মায়া বেগমের লাশ উদ্ধার করে।

নিহত মায়া বেগমের মামা উপজেলার দয়ামীর ইউপির চক মন্ডলকাপন গ্রামের কালাম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাগ্নিকে যৌতুকের জন্য তার স্বামী সজ্জাদ মিয়াসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। মায়ার লাশ নামাজরত অবস্থার মত গলায় রশি লাগানো গিয়ে দেখেছি আমরা। আমার ভাগ্নির ৫ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে এবং সে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যৌতুকের জন্য মায়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করত। গত কয়েক দিন আগে তার স্বামীকে আমরা চারটি গরু দিয়েছি। আমার ভাগ্নিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তাজপুর ইউপির স্থানীয় ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নেরুর মিয়া বলেন, ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা পুলিশ সঠিকভাবে বলতে পারবে। তবে নিহত মায়া বেগমের ঝুলন্ত লাশ মাটিরভরে নিলডাইন অবস্থায় পাওয়া গেছে।

গৃহবধূ মায়া বেগমের লাশ উদ্ধার ও সুরতহালকারী এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতরে মৃতদেহ মাটিরভরে নিলডাইন ও ফ্যানের সাথে ঝুলানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়াসহ বিস্তারিত তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

ওসমানীনগর থানার থানার নবাগত ওসি রাশেদ মোবারক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমরা অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী সজ্জাদ মিয়া ও শ্বশুর নজির মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে।

গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়া হলে মামলা নেয়া সহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত