কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

১১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৫:০৪

উৎসবের আমেজ কমলগঞ্জের মণিপুরিপাড়ায়, মহারাসলীলা মঙ্গলবার

ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ। পাড়ায় পাড়ায় কয়েক দিন ধরে চলে রাসনৃত্য ও রাখালনৃত্যের মহড়া। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে রাসপূর্ণিমা, মণিপুরি মহারাসলীলা বা রাসমেলা।

এটি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মণিপুরি-অধ্যুষিত মাধবপুর ও আদমপুরে মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। উৎসবের স্থায়িত্বকাল এক রজনী। আয়োজক মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায়।

এই এক রজনীকে কেন্দ্র করে রং ছড়িয়ে মণ্ডপ সমূহকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে পূর্ণ হচ্ছে ১৭৭ তম রাস উৎসব। আদমপুরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৩৪ তম মহারাসলীলা। মাধবপুরে মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া সম্প্রদায় মহারাসলীলা সেবা সংঘ এবং আদমপুরে মৈতৈ সম্প্রদায় মহারাস উৎসব উদযাপন কমিটির আয়োজনে রাস উৎসব এর আয়োজন করা হয়েছে।

আদমপুরে পাশাপাশি দুটি স্থানে আদমুপুর জোড় মণ্ডপ ও মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানেও থাকবে রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। তবে মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরি মৈতৈ পৃথক পৃথক স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্ত:স্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থনা সব একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সত্য সুন্দর মানবপ্রেম।

রাস উৎসব আয়োজকদের সূত্রে জানা গেছে, ‘মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র প্রথম মণিপুরে শ্রীশ্রী মহারাসলীলা বা রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। ‘রাস’ শব্দটা এসেছে জগৎপতি কৃষ্ণের ১২ ধরনের রস থেকে। এই রাসের সঙ্গে মেলা যুক্ত হয়ে ‘রাসমেলা’ হয়েছে। তবে ১২টি রসের মধ্যে রাসলীলায় মূলত সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর এই তিনটি রসের উপস্থাপনই হয়ে থাকে। উৎসবটা মণিপুরি সম্প্রদায়ের হলেও এটি এখন ধর্মীয় গণ্ডী পেরিয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত মনিপুরী সংস্কৃতির বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। উৎসবকে সফল করতে প্রায় মাস খানেক সময় ধরে ছয়টি বাড়িতে রাসনৃত্য এবং রাখাল নৃত্যের প্রশিক্ষণ ও মহড়া পরিচালিত হয়।’

মাধবপুর ও আদমপুরে রাসমেলার আয়োজকরা জানান, ‘মহা রাসলীলাল ম‚ল উপস্থাপনা শুরু হবে সকাল ১১টা থেকে ‘গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্যে’র মধ্য দিয়ে। গোধূলি পর্যন্ত চলবে রাখালনৃত্য। রাত ১১টা থেকে পরিবেশিত হবে মধুর রসের নৃত্য বা শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ। এই রাসনৃত্য বুধবার ভোর (ব্রাহ্ম মুহূর্ত) পর্যন্ত চলবে।’

মাধবপুর মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, ‘আমাদের কাছে হেমন্তকাল মানেই রাস-পূর্ণিমা, রাস উৎসব। আদমপুর মহারাস উদযাপন কমিটির নেতা ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ‘আমাদের সকল আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। উৎসব সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হবে।’ জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথিরা থাকবেন।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত