নিজস্ব প্রতিবেদক

০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৫৫

সিলেটে ১২৯ একর জমি নিয়ে হচ্ছে স্টোন ক্রাশিং জোন

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম এর সাথে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি আবু তাহের মোঃ শোয়েব।

সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ও ব্যবসায়ীদের সমস্যাবলী নিরসনে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। তাই ব্যবসায়ীদের সমস্যাবলী নিরসনে আমাদেরকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

তিনি জানান, কম্পিউটারাইজড ট্রেড লাইসেন্স চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সিলেট জেলার সকল পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অতিশীঘ্রই তা চালু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। হোটেল ও রেস্ট হাউস মালিকদের পরিবেশগত ছাড়পত্র সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সিলেট চেম্বারের একটি সভা আয়োজনের উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করবেন বলে জানান। জেলা প্রশাসক বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত খালি প্লটগুলোর পুরনো বরাদ্দ বাতিল করে নতুন উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ প্রদানের বিষয়ে বিসিকের ডিজিএম ও প্লট বরাদ্দ কমিটির সমন্বয়ে একটি সভা আয়োজন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পর্যটন খাতের উন্নয়নে বর্তমানে বিছনাকান্দিতে ৪ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প আমাদের হাতে এসেছে। আগামীতে রাতারগুল, ভোলাগঞ্জ ও জাফলং এর উন্নয়ন প্রকল্পও হাতে আসবে বলে তিনি জানান। বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট রোড ট্রাক চলাচলের উপযোগী করণ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক জানান, বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য এই রোডটি পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অচিরেই সেটি চালু হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি জানান, পাথর শিল্পের প্রসারে ১২৯ একর জমি নিয়ে গোয়াইনঘাটে নতুন একটি স্টোন ক্রাশিং জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। হাউজিং ব্যবসায়ীদের জমি নামজারি সংক্রান্ত সমস্যা বিষয়ে তিনি জানান, কৃষি জমি হিসেবে উল্লেখিত জমিগুলোতে হাউজিং করার ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সে বিষয়ে সুরাহার জন্য ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব বলেন, বর্তমান সরকার সুখী সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছেন। সকল সেক্টরে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। সিলেট জেলাধীন অনেকগুলো পৌরসভায় কম্পিউটারাইজড ট্রেড লাইসেন্স চালু করা হয়েছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা থেকে ব্যবসায়ীদের তথ্যাদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এখনও কিছু পৌরসভা ও প্রায় সকল ইউনিয়ন পরিষদে হাতে লেখা ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করায় সেসব অফিস থেকে ব্যবসায়ীদের তথ্য সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তিনি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং ট্রেড লাইসেন্স কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়নে সিলেটের সকল পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটারাইজড ট্রেড লাইসেন্স চালুর আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, সিলেটের হোটেল ও রেস্ট হাউস মালিকগণ বর্তমানে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিয়ে বিভিন্ন ধরণের হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক হোটেল মালিকগণ প্রবাসী হওয়ায় সময়মত পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন করতে পারেন না, আবার অনেকে ফি জমা দিয়েও ছাড়পত্র পাচ্ছেন না। তিনি সিলেটকে পর্যটন নগরী বিবেচনায় হোটেল ও রেস্ট হাউস মালিকদের এসব সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি থেকে পাথর পরিবহনের জন্য বাদাঘাট-এয়ারপোর্ট সড়কটি ৪ লেনে রূপান্তরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ট্রাক চলাচলের উপযোগী করে চালু রাখার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। এছাড়াও তিনি যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা মার্কেটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং এর সময় সিলেট চেম্বারের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানান।

সভায় চেম্বার নেতৃবৃন্দ হাউজিং ব্যবসায়ীদের জমি নামজারিতে বিরাজমান সমস্যা নিরসন, বিসিকের খালি প্লটগুলো নতুন উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ প্রদান, স্থলবন্দরের লেবার হ্যান্ডলিং চার্জ হ্রাসকরণ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃক ব্যবসায়ীদের হয়রানি, বন্দরবাজার-মহাজনপট্টি পয়েন্টে অবস্থিত ডিভাইডার অপসারণ সহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া তুলে ধরেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন সাহা, সহ সভাপতি তাহমিন আহমদ, মোঃ এমদাদ হোসেন, মো. সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, মুশফিক জায়গীরদার, এহতেশামুল হক চৌধুরী, আব্দুর রহমান, হুমায়ুন আহমদ, মো. আতিক হোসেন, মো. নজরুল ইসলাম, আলিমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত