সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১৭:৪৮

আওয়ামী লীগের কাছে সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের চার দাবি

আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ও চলমান তৃণমূলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের কাছে চারটি দাবি তুলে ধরেছেন সিলেটের মুক্তিযোদ্ধারা।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সর্বশেষ নির্বাচিত কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল।

মুক্তিযোদ্ধাদের দাবীগুলো হচ্ছে- এদেশে রাজনীতি করার অধিকার শুধুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ ব্যক্তির রয়েছে। এদেশে রাজনীতি করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোন পরিবারের সন্তান হওয়া চলবে না। সরকারী বা বিরোধীদল কোথাও ’৭১ এর রাজাকার, আলবদর, আল শামস বা বর্তমান জামাত-শিবির পরিবারের কোন সদস্যের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। ৭১ এর রাজাকার, আলবদর, আল শামস, শান্তি কমিটির সদস্যদের সন্তান এবং অধুনা বিএনপি-জামাত থেকে অনুপ্রবেশকারী কাউকে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলীয় কোন পদে নির্বাচিত বা মনোনয়ন না দেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের কোন কোন উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজাকার/শান্তি কমিটির সদস্যদের সন্তানদের নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। তারা এ সকল কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং এসকল পদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ ব্যক্তিদের মনোনয়ন বা পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল আরও বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল আপামর দেশপ্রেমিক জনসাধারণকে আহবান জানাচ্ছি এদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সকল অপশক্তিকে নির্মূল করার জন্য। ২০০৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ৩, ৪ ও ৫ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান হয়েছিল। ওই সময়ে জীবিত সকল যুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডারগণ ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের উপস্থিতিতে নতুন করে আমরা ’৭১ এর ঘাতক দালালদের মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করেছিলাম। পরবর্তীকালে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ সরকার এ দুঃসাহসী কাজটুকু করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করায় আমরা কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, এ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং উন্নয়নের রোল মডেল রূপান্তরিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও বেঁচে থাকার ন্যুনতম ব্যবস্থা করে দিয়ে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন তিনি। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের গবেষণার পথ তিনিই উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।

সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে রাজনীতি করার অধিকার শুধু রাজনীতিবিদরাই সংরক্ষণ করেন। নিয়মিত কর্মজীবন সম্পন্ন করে অবসর জীবনে এসে রাজনীতি করতে গেলে সমগ্র জাতির জন্য শুধু বিড়ম্বনাই তৈরি হয়। শিশু-কিশোর কাল থেকেই লক্ষ্য স্থির রেখে এগুতে হয় এবং এজন্য প্রয়োজন জ্ঞান আহরণ ও নিয়মিত পড়ালেখা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মেজর রফিক উদ্দিন আহমদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কুটি মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত আলী, মো. সিদ্দেক আলী, জালাল উদ্দিন, ওয়াসিদ আলী, আবু সাইদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব আলী, মো. সুনা মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক জবরুল হোসেন,  আহবায়ক মো. জিল্লুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোজ কপালী মিন্টু, সিলেট জেলার ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মাজেদুল ইসলাম সুমন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের মো. আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত