কমলগঞ্জ প্রতিনিধি

০৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২২:০৫

কমলগঞ্জে ২ মন্দিরের বিরোধ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ২ মন্দিরের বিরোধের জেরে মিথ্যে মামলায় হয়রানির অভিযোগ করেছেন শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সদস্যরা।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টায় কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শমশেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে এই অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিরণ বৈদ্য বলেন, ১৯৬২ সালে আলীনগর চা বাগানের ইটখোলা লাইনে সার্বজনীন শ্রী শ্রী রাখালথলি মহাবিষ্ণু মন্দিরটি স্থাপতি হয়। এরপর থেকে এ এলাকার চা বাগানসহ সর্বস্তরের সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নিয়মিত এ মন্দিরে পূজা অর্চনা করে আসছেন। দামোদর মাস উদযাপন উপলক্ষে মহাবিষ্ণু মন্দিরের নিজস্ব টিনশেড ঘরে ইসকন সমর্থিত কিছু যুবকদের এক মাসের জন্য পূজা অর্চনার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ঐ যুবকরা নামহট্ট সংঘের নামে পূজা অর্চনা শুরু করে। একই জমির মধ্যে এক সাথে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির ও নামহট্ট সংঘের পূজা অর্চনা নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ইসকন সমর্থক নামহট্ট সংঘের যুবকেরা সুকৌশলে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত ২৫ নভেম্বর শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যদের সাথে ইসকন সমর্থিত নামহট্ট সংঘের সদস্যদের তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু সংঘের ৭ জন যথাক্রমে কিরণ বৈদ্য (৩২), বরুণ বৈদ্য (৩৯), চামটু রবিদাস (৪২), শৈলেন কুমার বৈদ্য (৩০),রাম কুমার বৈদ্য (৫০) ধারী লাল বৈদ্য (৫২) ও শির কুমার বৈদ্য (৪১) আহত হয়েছেন।

আহতদের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। নামহট্ট সংঘের সদস্যরা উল্টো শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরের সদস্যদের আসামী করে মৌলভীবাজার আদালতে মিথ্যে অভিযোগ তুলে পর পর তিনটি হয়রানীমূলক মামলা করেছেন। এ মামলার কারণে তারা এখন নানাভাবে হয়রানির শিকার, আর্থিক ক্ষতি ও সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন বলে কিরণ বৈদ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় নামহট্ট সংঘের সদস্যরা পূজা অর্চনার আড়ালে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ছে। কিছুদিন পূর্বে ইসকন সমর্থক এক ভক্ত কলেজ ছাত্রী নামহট্ট সংঘের এক সদস্যের সাথে পালিয়ে যায়। এজন্য শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির সমর্থক ও এলাকাবাসী তাদেরকে এ মন্দির এলাকায় অবস্থান করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে না। তারা নিজেরা নিজেদের ঘর ভাঙচুর করে মামলা সাজিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুপচাঁন কৈরী, কোষাধ্যক্ষ শৈলেন কুমার বৈদ্য, আলীনগর ইউপি সদস্য রাম বরস বৈদ্য, চা শ্রমিক রাহুল যাদব ও কমিটির উপদেষ্টা রাজ কাপুর কৈরী প্রমুখ।

এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ ইসকন সমর্থিত নামহট্ট সংঘের সদস্য প্রতাপ বৈদ্য মুঠোফোনে বলেন,  আসলে শ্রী শ্রী মহাবিষ্ণু মন্দিরে গত ৬ মাস আগে একটি পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তখন চেয়েছিল এই বিষ্ণু মন্দিরে মহাহট্ট সংঘ নিবন্ধিত হয়ে তাদের কথামত চলতে হবে। গত ২৫ নভেম্বর দামোদর মাস উপলক্ষে পূজা অর্চনার জন্য প্রসাদ তৈরি করা হচ্ছিল। তখনই মহা বিষ্ণু মন্দিরের লোকজন এসে মহাহট্ট সংঘের মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।
 



আপনার মন্তব্য

আলোচিত