গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি

২১ এপ্রিল, ২০২০ ১৫:১১

ঝুঁকিতে গোয়াইনঘাট কৃষি বিভাগ, স্বাস্থ্য বীমায় অন্তর্ভুক্তির দাবি

করোনাভাইরাসের এই কঠিন ঝুঁকির মধ্যেও নিরলসভাবে কাজ করছেন গোয়াইনঘাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পুরো দেশ লকডাউনে ঘরে থাকলেও কৃষকদের সেবা দিতে প্রতিদিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা। করোনা পরবর্তী খাদ্য চাহিদা পূরণ ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গোয়াইনঘাটের ১০ ইউনিয়নের কৃষকদের দ্বারে দ্বারে ফসল উৎপাদনের আধুনিক প্রযুক্তির যান্ত্রিক পদ্ধতির সরঞ্জাম নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন তারা।

সরকারঘোষিত আউশের প্রণোদনা বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশাদারিত্বের কারণে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরকে সরকারের ঘোষিত স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

করোনা ঝুঁকিতে থাকা দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো গোয়াইনঘাট উপজেলায় ইতিপূর্বে করোনা সংক্রমিত একজন ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। এমতাবস্থায়ও প্রতিদিন গোয়াইনঘাট উপজেলার কৃষি সেবা ছাড়াও প্রান্তিক এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বাড়তি দায়িত্ব পালনও করছেন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা।

প্রধানমন্ত্রী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আবাদি জমি ফেলে না রেখে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এমন নির্দেশনা পাওয়ার পর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির সময়ও নিজ কর্মস্থলে অবস্থানপূর্বক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উল্লিখিত নির্দেশনা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন ও অনুসরণ করে সারা দেশের ন্যায় গোয়াইনঘাটেও নিরলসভাবে কাজ করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এই মুহূর্তে মাঠে অবস্থানপূর্বক সেচ, সার ও বালাই ব্যবস্থাপনাসহ করণীয় বিষয় সম্পর্কে কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান, বোরো ফসল কর্তন ও মাড়াই, কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে শ্রমিক খরচ সাশ্রয় ও সঠিক সময়ে ফসল ঘরে তোলা, খরিপ-১ মৌসুমে আউশ ফসলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি করোনাভাইরাসজনিত চলমান দুর্যোগকালীন সময়েও কৌশলগত পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করে গোয়াইনঘাটের প্রতিটি বসতবাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ ও সম্ভাব্য স্থানে দুই সারি আদা ও হলুদ চাষের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি বাড়ির পুকুরপাড় ও রাস্তার পাশে সবজি চাষে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বসতবাড়ির আঙ্গিনা ও আশেপাশে সম্ভাব্য স্থান পেয়ারা, লেবু, পেঁপে ও অন্যান্য ফল চাষে কৃষককে উদ্বুদ্ধকরণসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে বিরাজমান অবরুদ্ধ অবস্থায় দেশের খাদ্য উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য মহাপরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব যেমন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিক্রি কার্যক্রম তদারকি (ট্যাগ অফিসার) কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন, ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা, কৃষি প্রণোদনা বিতরণ কাজে সহযোগিতা, সার ও বালাইনাশক দোকান তদারকিসহ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ফসল সুরক্ষার পরামর্শ প্রদানসহ নানাবিধ কাজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সুলতান আলী বলেন, সরকার চলতি করোনাভাইরাস দুর্যোগে মাঠে কাজ করা ডাক্তার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নিয়ে এসেছেন। এটা অত্যন্ত মহৎ, উদার ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এই সময়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে আমরাও সরকারের নির্দেশনা মেনে নিজেদের পেশায় নিয়োজিত আছি। কৃষকের ক্ষেতও যখন করোনার ঝুঁকিতে ঝুঁকিপূর্ণ, এমতাবস্থায় আমরা কৃষকদের দোরগোড়ায় গিয়ে কৃষি সেবা দিয়ে যাচ্ছি। মানবিক কারণে আমাদেরও কৃষি বিভাগকেও সরকারের ঘোষিত স্বাস্থ্য বীমার আওতায় নিয়ে আসার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর সদয় কৃপাদৃষ্টি কামনা করছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত