তাহিরপুর প্রতিনিধি

২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০২০ ২২:৫০

ছুটির দিনে শিমুল বাগানে পর্যটকদের ঢল

বসন্তের মৃদুমন্দ বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। গাছে গাছে লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে যেন ডাকছে প্রকৃতি প্রেমী পর্যটকদের। আর পর্যটকরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন এখানে। প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনেই হাজার মানুষ ভিড় করেন। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় পর্যটকদের ভিড় ছিলো তুলনামূলক বেশি।

মেঘালয় পাহাড়, বারেকটিলা আর যাদুকাটা নদী- আশপাশের এই অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশ শিমুল বাগানের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রাম সংলগ্ন শিমুল বাগানটির অবস্থান।

প্রতি বছরের মতোই শীতের শেষে ফাল্গুনের শুরু থেকে বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদিনের হাতে লাগানো ৩হাজারের অধিক শিমুল গাছে ফুলের পাপড়ি মেলতে শুরু করে। ফলে বাগানটাকে দূর থেকে দেখলে মনে হয় লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে রেখেছে কেউ। আর কিছু দিনের মধ্যেই ঝড়ে পড়বে শিমুল গাছের লালে লাল ফুলগুলো। ফলে পর্যটকরা এখন হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।

সপ্তাহের সাত দিনেই মানুষের ঢল নামলেও সরকারী ছুটির দিন পা ফেলার জায়গা থাকে না শিমুল বাগানে।

এদিকে, আগত পর্যটক, দর্শনার্থী ও প্রকৃতিপ্রেমীদের নিরাপত্তা সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি। তিনি জানান, আগত সকল পর্যটকদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

পর্যটকদের সুবিধার্থে সম্প্রতি বাগানের মালিকদের পক্ষ থেকে বাগানের ভিতরে একটি ছোট খাবার হোটেল, চেয়ার ও টেবিল বসিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা উপকৃত হবে বলে জানান শিমুল বাগানের প্রতিষ্ঠাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন।

তিনি বলেন, শুক্রবার সরকারী ছুটি থাকায় প্রকৃতিপ্রেমী আর দর্শনার্থীদের ঢল নামে। এ যেন প্রকৃতি প্রেমীদের মিলন মেলা। বাবার রেখে যাওয়া এই দৃষ্টি নন্দন শিমুল বাগানটি দেখাশোনা করার পাশাপাশি আরও কীভাবে ভাল রাখা যায় ও সৌন্দর্য বাড়ানো যায় সে চেষ্টা করছি।

তিনি আরও জানান, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে আরও বেশী পর্যটক আসবে এখানে। এছাড়াও এই বাগানটিকে ঘিরে পর্যটকদের স্বার্থে ও জেলার একটি আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট করা যায় সে চেষ্টাও করছি।

বাগানে আসা পর্যটক প্রীনিতা প্রিয়াঙ্কা বলেন, নদী,পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলন মেলা এখানে। এই বাগানটি দেখতে অসাধারণ। এত বড় শিমুল বাগান দেশের কোথাও আর দেখে নি। যার ফলে বাগানের ভিতরটায় গেলে এক অন্য রকম ভাল লাগার জন্ম নেয়।

এই বাগানে বেড়াতে আসা সাজিদুর রহমান সাজু বলেন, এই বাগানের গল্প অনেক শুনেছি। তবে এখানে না আসলে এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতাম না।

জানা যায়, ২০০২সালে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে ৯৮বিঘা অনাবাদী জমি ক্রয় করে এই শিমুল বাগান তৈরি করেন। সে সময় এ বাগানে সারিবদ্ধ ভাবে ৩হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন তিনি।

কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে সরাসরি বিভিন্ন ধরেনের বাসে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতু থেকে সিএনজি বা মোটরসাইকেল জনপ্রতি একশত টাকা লাউড়েরগড় বাজার। বাজার পার হয়ে যাদুকাটা নদী আর নদী পার হলেই শিমুল বাগান। আবার সুনামগঞ্জ আব্দুল জহুর সেতু পাড় হলে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি নিয়ে তাহিরপুর উপজেলা এরপর বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার হয়ে শিমুল বাগান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত