সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০৯:২৯

ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যায় রিমান্ডে মোক্তার

ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত হত্যায় গ্রেপ্তার মোক্তার

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল ২০ থেকে ৩০ জন। এরমধ্যে ৫-৬ জন হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়। বাকিরা বিভিন্ন স্পটে রেকিতে ছিল। হত্যাকারীরা প্রথমে নগরীর লালখান বাজার ইস্পাহানী মোড়ে জড়ো হয়। সেখান থেকে মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশায় গিয়েছিল সুদীপ্তকে খুন করতে তার (সুদীপ্তের) সদরঘাটের নালাপাড়ার বাসায়।

চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্তর্কোন্দলসহ একাধিক কারণেই সুদীপ্তকে খুন করা হয়। ঘটনার ৮ দিনের মাথায় যুবলীগ ক্যাডার মোক্তার হোসেন (৩০) গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে দেয়া জবানিতে সুদীপ্ত হত্যার এসব তথ্য জানায়।

সুদীপ্ত হত্যায় মোক্তার সরাসরি জড়িত ছিল বলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। এদিকে শনিবার বিকালে মোক্তার হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরঘাট থানার পরিদর্শক রুহুল আমিন। আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুক্রবার রাতে নগরীর বড়পোল এলাকার শাহী বাস কাউন্টার থেকে মোক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টার বাসে তার পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে ভোলায় যাওয়ার কথা ছিল। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মাছিরপুর এলাকার মোসলেম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মোক্তার চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকায় থাকত। গ্রেপ্তার মোক্তার লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

শনিবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে গ্রেপ্তার মোক্তার হোসেনের সম্পর্কে জানায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। সিএমপির সদর দপ্তরের সামনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেছে এবং জড়িতদের সম্পর্কেও তথ্য দিয়েছে। তার দেয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

আরও বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে খুন হয়েছেন সুদীপ্ত। এর নেপথ্যে একটি নয়, একাধিক কারণও রয়েছে। তবে মোক্তারের সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল না। সুদীপ্তের কয়েকজন শত্রু মোক্তারকে এ খুনে ব্যবহার করে। যারা মোক্তারকে ব্যবহার করেছে সে তাদের নাম প্রকাশ করেছে। আমরা প্রত্যেকের নাম যাচাই করে দেখছি।

সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফ, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) জাহাঙ্গীর আলম, সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আখতার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) রহুল আমিনও উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, গ্রেপ্তার মোক্তার এলাকায় নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয়। এলাকার বিভিন্ন দলীয় মিছিল-মিটিংয়ে তাকে প্রথম সারিতে দেখা যায়। সুদীপ্ত হত্যায় জড়িত লালখান বাজার এলাকার পিচ্চি মাসুম, ওয়াসিম, হানিফ, দুধ স্বপন, সোহাগসহ একাধিক ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, ৫ অক্টোবর রাতে লালখান বাজারের একটি বাসায় বসে সুদীপ্তকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী পরদিন সকালে সুদীপ্তের সদরঘাট থানাধীন নালাপাড়ার বাসার সামনে গিয়ে তাকে ডেকে দিতে বলে। কাকাতো ভাই চন্দন বিশ্বাসের স্ত্রী শিল্পী বিশ্বাস সুদীপ্তকে ঘুম থেকে ডেকে দেয়। এরপর সুদীপ্ত তাদের সামনে গেলে তারা টেনেহিঁচড়ে তাকে বাসার বাইরে নিয়ে গিয়ে লোহার রড, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। হামলাকারীরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে এলাকা ছেড়ে যায়। পরিবারের লোকজন আহত সুদীপ্তকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সুদীপ্তের বাবা বাবুল বিশ্বাস বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত