সিলেটটুডে ডেস্ক

২৬ জুন, ২০১৮ ১৬:২২

গাজীপুরে ভোট গ্রহণ শেষ, ৭ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা ভোটকেন্দ্রের লাইনে দাঁড়িয়েছেন নিয়ম অনুযায়ী চারটার পরও তাদের ভোট নেওয়া হবে। এরপর শুরু হবে ভোটগণনা।

ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ থাকলেও কোনো রকম সহিংসতা ছাড়াই শেষ হয় নির্বাচন। তবে অনিয়মের কারণে ৭টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ৩টার পর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, ‘ভোটে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৩৭২ নম্বর কেন্দ্র টঙ্গীর খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয়-১, ৩৭৩ নম্বর খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয়-২, টঙ্গীর বড় দেওড়ার হাজি পিয়ার আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ৯৮ নম্বর কেন্দ্র বাসন এলাকার ভোগড়া মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭৪ বিন্দান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, ৩৪২ জাহান পাবলিক দত্তপাড়া ও ৬১ এমইএইচ আরিফ কলেজ কোনাবাড়ী কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।’

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাগবাড়ী হাক্কানিয়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা-২-এর ভোটকেন্দ্রের নারী বুথে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এ সময় সেখানে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন আহত হয়েছেন বলে জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর রাজু (এনআইডি আইডিয়া প্রজেক্ট)।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৪২৫টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। মোট সাত মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ২৫৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আরো প্রার্থী থাকলেও গাজীপুর সিটির মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির (ধানের শীষ) মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার। সকালে নগরীর বশিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির প্রার্থী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।

এদিকে বেলা ১টার দিকে গাজীপুর শহরের বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে অনেক কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করে ভোট বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।

'শতাধিক কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ ও প্রশাসন এসব করছে। আমি এখনই এ ভোট বন্ধের দাবি জানাই।'

নির্বাচন বন্ধ না করলেও শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, 'কারণ এটা না করলে সরকারের চরিত্রটা দেশবাসী বুঝতে পারবে না। আমি আগেই বলেছিলাম, কেন্দ্র দখল, হামলা এগুলো হবে এবং সেটা হয়েছে। তবে আমি নিরাশ নই। ভোটের লোভে মিথ্যা বলব না।'

তিনি বলেন, 'ইসির কর্মকর্তাদের বিবেক জাগ্রত হোক।'

এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি সব ভোটকেন্দ্রের খোঁজ-খবর রাখছি। কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পাইনি। আমি নিজেও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়েছি। সকালে বৃষ্টির কারণে ভোটাররা বের হতে পারেননি। এখন সবাই ভোট দিতে আসছেন। এটা তাদের নাগরিক অধিকার। আমি আমার দলের নেতাকর্মীদের বলে দিয়েছি- ভোটাররা যেন সম্মানের সঙ্গে শেষ সময় পর্যন্ত ভোট দিতে পারেন সে বিষয়ে সহযোগিতা করতে।

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী এই প্রার্থী বলেন, গাজীপুরের মানুষ বঞ্চিত। তারা যাতে একটি পরিচ্ছন্ন নগরী পায় সেজন্য আমার চেষ্টা থাকবে। আমি গাজীপুরকে পরিকল্পিত গ্রিন (সবুজ) সিটি করতে চাই।

গাজীপুরের এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার ছাড়াও স্বতন্ত্র এবং বিভিন্ন দলের আরো পাঁচজন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে লড়ছেন। তারা হলেন- সিপিবির কাজী রুহুল আমিন (কাস্তে), বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন (মোমবাতি), ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান (মিনার), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন (হাত পাখা) এবং স্বতন্ত্র  ফরিদ আহমদ (টেবিল ঘড়ি)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত