সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

২৪ এপ্রিল, ২০১৬ ১৪:৫৮

‘আমরা মরে গেছি কিন্তু সেটা কেউ টেরও পাচ্ছি না’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর খুনের ঘটনায় সবাই চুপচাপ থেকে যাওয়াকে মরে যাওয়া এবং মরে যাওয়া টের পাওয়ার মত হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক ও ব্লগার আরিফ জেবতিক।

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে আরিফ জেবতিক লিখেন, 'যারা চেয়েছিল সবাইকে চুপ করিয়ে দিতে, তাঁরা ঠিকই চুপ করিয়ে দিয়েছে।'

আরিফ জেবতিকের ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিস্তারিত-

টুটুল ভাইরা যখন আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, (তখনও দীপন ভাইয়ের খবর এসে পৌঁছায় নি) ছেলেরা রক্ত জোগাড়ে ছুটোছুটি করছে-আমার তেমন কিছু করার নেই, আমরা অনেকেই হতবিহবল হয়ে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এক সাংবাদিক এসে জিজ্ঞেস করলেন, 'আপনাদের কর্মসূচি কী?' আমি বললাম, প্রকাশক নেতারা নিশ্চয়ই আসবেন, তাঁরা কর্মসূচি দিলে আমরা তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানাব। দেশের একজন প্রকাশকের উপর লেখা প্রকাশের জন্য হামলা হয়েছে, এখানে শুরুতেই প্রকাশক নেতাদেরকে ডিঙিয়ে অন্য কারো কর্মসূচি দেয়াটা ঠিক হবে না।

আমি অবাক হয়ে দেখলাম, আমাদের প্রকাশক নেতারা কেউ এলেন না, কোনো কর্মসূচি দিলেন না।

যেসব বড় বড় লেখকদের লেখা প্রকাশ করে টুটুল ভাই এডভান্সের টাকা আগে দিয়ে দেয়ার ভদ্রতা দেখাতেন, সেই রথিমহারথি লেখকদের কেউ কোথাও একটা কথা বললেন না।

বন্ধু নজরুল স্ট্যাটাসে লিখেছেন-
''বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক খুন হলেন। ছাত্ররা চুপ, ছাত্র সংগঠনগুলো চুপ, শিক্ষকেরা চুপ, শিক্ষক সংগঠনগুলো চুপ।
একজন সেতার বাদক খুন হলেন। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো চুপ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট চুপ।
একজন সম্পাদক খুন হলেন। লেখকেরা চুপ।
সবাই চুপ, কোথাও কোনো শব্দ নাই। শুধু গাড়ির হর্ন সরব।''

আমরা আসলে এক মৃত জনপদে বাস করছি নজরুল।

যারা চেয়েছিল সবাইকে চুপ করিয়ে দিতে, তাঁরা ঠিকই চুপ করিয়ে দিয়েছে।

তারা সবাইকেই মেরে ফেলেছে।
কেউ কেউ পড়ে থাকে রাস্তার পাশে নিথর।

আর আমরা বাকিরা সকলে হাঁটছি-ঘুরছি-সেলফি খেচছি,
কিন্তু মরে যে গেছি সেটা কেউ টেরও পাচ্ছি না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত