সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৬ মে, ২০১৬ ১৫:১৭

নাস্তিকতা, কটূক্তি ও অনুভূতি

বাংলাদেশে চলমান 'নাস্তিকতা, কটূক্তি ও অনুভূতি' নিয়ে আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। আলোচনা-সমালোচনা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে এ নিয়ে খুনোখুনি, বিবাদ ও মানুষকে হেনস্থা করার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

এমন অবস্থায় ফেসবুকে এ নিয়ে লিখেছেন দেবরাজ চৌধুরী। তিনি তার দেওয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শেষে মানুষে মানুষে চিন্তার ভিন্নতা নিয়ে আলোকপাত করেছেন।

দেবরাজ চৌধুরীর ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিস্তারিত-

শাকিব খান বাংলাদেশের প্রথম সারির নায়ক, পরিসংখ্যান বলে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়ক। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমার পছন্দের নায়ক তিনি নন। তার কান্না, তার রোমান্স, তার একশন আমার মোটেই ভাল লাগেনা। মেকআপ করার পর তাকে আমার মেয়েলি মনে হয়। অথচ আমার কাছে তিনি যেমনই হোন না কেন, তার একটি বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী আছে, এবং তিনি তার সফলতাও বারবার প্রমাণ করে এসেছেন। এখন যাকে আমার ভাল লাগেনা, তার সম্পর্কে ভাল না লাগার কারণ বলা কি সবসময়ই কটূক্তি?

আমাদের স্কুলের বন্ধু শাহিন। সহজ সরল ভাল ছেলে, তাঁর এই সরলতার সুযোগ আমরা সবসময় নিতাম। হঠাৎ করে তাকে ডেকে বলতাম, 'শাহিন, তুই স্যারকে গালি দিলি কেন? এখন স্যার কে গিয়ে আমরা বিচার দেব। বাঁচতে চাইলে খাওয়া।' প্রথমে সে একটু প্রতিবাদ করত, কিন্তু যখন দেখতো দোষ না করেও নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের কোন সুযোগ নেই, তখন সে নিজেই বলত, 'প্লিজ, স্যারকে বলার দরকার নেই, তোরা কি খাবি বল।' সত্যিই কটূক্তি প্রমাণ করা কত সহজ!!

আমি নিজে ধর্মে সংশয়বাদী মানুষ। জানিনা আমার ভবিষ্যৎ কি নাস্তিকতা নাকি আস্তিকতা। মনেপ্রাণে আস্তিক বা নাস্তিক হওয়া খুব কঠিন, আমার মতো মানসিকভাবে দুর্বল মানুষের জন্য তা আরও কঠিন। কিন্তু অত্যন্ত ধার্মিক আমার পরিবার, বিশেষ করে আমার মা। আমি নিজেও একটা সময় 'ভালই' ছিলাম। কিন্তু দিনে দিনে আমার ভেতর জাগছে অনেক প্রশ্ন, খুঁজছি সেগুলোর উত্তর। এগুলো নিয়ে মায়ের সাথে আমার তর্কের শেষ নেই, কখনও কখনও তিনি রাগও করেন। তবে অনুভূতিপ্রবণ এই সময়ে এখনও বেঁচে আছি কারণ মা তার বিশ্বাসে আঘাত দিয়ে কথা বলার জন্য বটিদা নিয়ে আমাকে কখনো আক্রমণ করেননি। আমার মা'র ঈশ্বরের উপর অগাধ বিশ্বাস, তিনি বিশ্বাস করেন একদিন ঈশ্বরই আমাকে পথে নিয়ে আসবে। প্রতিনিয়ত তিনি আমার জন্য এবং আমার হয়ে প্রার্থনা করেন। তার সহনশীলতা, তাঁর বিশ্বাস ও অনুভূতিকে আমি শ্রদ্ধা করি।

কেউ যদি কোন নীতি, আচার বা ধর্মে বিশ্বাস না করে, স্বাভাবিকভাবেই তার বেশিরভাগ যুক্তি ও বক্তব্য এগুলোর বিপক্ষে যাবে। এবং এর প্রতিক্রিয়াও থাকবে। কিন্তু এই প্রতিক্রিয়ার ধরনই বলে দিবে আপনার বিশ্বাস আপনাকে এতদিন কি শিখিয়েছে। আপনার প্রতিক্রিয়াই বলে দিবে আপনার বিশ্বাস নিয়ে ঐ অবিশ্বাসীর বক্তব্য যৌক্তিক ছিল নাকি অযৌক্তিক।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত