সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১২ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৯:৫০

মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের ‘ফটোশপ ছবি’, সমালোচনা

ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশের একটি ছবি ফটোশপ করার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টার পত্রিকার বৃহস্পতিবারের প্রিন্ট সংস্করণে সমাবেশের একটি বড় ছবি ছাপা হয়েছে। ছবিটির পর্যালোচনা করে পত্রিকাটি জানিয়েছে তিনজন ব্যক্তির মুখের ছবি দুইবার করে রয়েছে পাশাপাশি। অন্য এক ব্যক্তির হাত দেখা গেলেও মাথা নেই। এছাড়া পিছনে দুইটি গাছের সাথে বাধা একটা ব্যানারে অসামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দ্যা ডেইলি স্টারের "পিআইডির ছবিতে "আওয়ামী লীগের সমাবেশ: যমজ, জোড়া-যমজ আর ভৌতিক হাত" শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট (পিআইডি) রাতে এই সমাবেশের একটি ডিজিটাল ছবি বিভিন্ন মিডিয়ায় সরবরাহ করে।"

প্রতিবেদনে বলা হয়, "এই ছবিতে (হলুদ বড় বাক্সে দেখুন) দেখা যাচ্ছে জোড়া-যমজ দুজন ব্যক্তিকে, ওদের দুজনের মাথা একটা গেঞ্জি থেকে বের হয়ে আসছে। তবে জোড়া-যমজ হলেও ওরা এক মায়ের পেটের ভাই হবে না – কারণ তাদের চেহারায় কোনো মিল নেই! এটা হতে পারে যে ওরা দুই মায়ের পেটের যমজ ভাই!

"ডান পাশের জোড়া-যমজ ভাইটার (ছোট হলুদ বৃত্তে) আবার একদম অবিকল দেখতে একটা জোড়া ভাই আছে – যে তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে! তার চেহারাটা একটু অন্য এঙ্গেল থেকে তোলা! এদের চেহারার মিল দেখে মনে হয় তারা এক মায়ের সন্তান! আবার, বাম পাশের জোড়া-যমজ ভাইটাই (নীল বৃত্ত) বা পিছিয়ে থাকবে কেন? ওরও একটা অবিকল যমজ ভাই আছে যে ওর সামনে দাঁড়িয়ে – ওর চেহারাটা একটু ভিন্ন এঙ্গেলে!"

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, " ওদের আরেকটু সামনে দাঁড়িয়ে আছে একজোড়া অবিকল যমজ ভাই! এই দুই ভাই অনেক কসরত করে একজন আরেকজনের প্রতিচ্ছবির মতো পোজ দিয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে পেছনের ভাইটার জন্য খারাপ লাগে। ওর বাঁ হাতটা নেই! মনে হচ্ছে ওর একটা ফটোশপ এক্সিডেন্ট হয়েছিল!

"এইসব জোড়া ভাইদের পেছনে যদি তাকান তাহলে দেখতে পাবেন একটা লোকের অর্ধেক অংশ নেই! যারা ‘স্টার ট্রেক’ দেখেন, তারা বুঝতে পারবেন যে স্কটি ম্যাটার ট্রান্সমিশন করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলো; এই লোকের অর্ধেক শরীর এখন এন্টারপ্রাইজের ভেতর (পৃথিবীর অক্ষপথে) আর বাকি অর্ধেক এই সমাবেশে!"

এদিকে, ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তানভীর আহমেদ নোভেল নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেন, "রাগবো? না হাসবো? বুঝতেছি না।"

ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন শেয়ার করে অনলাইন এক্টিভিস্ট আরিফ রহমান এটাকে "আওয়ামী ভূতলীগ" হিসেবেও বিদ্রূপ করেছেন।

এদিকে, ডেইলি স্টারের সূত্রে অন্য এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন "সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরণের ছবি দেয়া দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেয়া হয়েছে। এ ধরণের কাজ কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়"।

বিবিসির প্রতিবেদন ফেসবুকে শেয়ার করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সাব্বির খান লিখেছেন, "প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং ডিজিটেলাইজেশনে অপরিণামদর্শী যে 'তুখোড়তার' ছাপ রেখে যাচ্ছে, তাতে আমি উদ্বিগ্ন। ভাই ও বোনেরা আমার, এসব থামান। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কিছুটা কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এসব 'আকাম' বন্ধ করুন।"

বিবিসি বাংলা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ফটোশপ করা একটি ছবি মিডিয়াতে সরবরাহ করার ফলে পিআইডির পরবর্তী কোন ছবির ব্যাপারে বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত