যুক্তরাজ্য সংবাদদাতা

১০ জানুয়ারি, ২০১৬ ১০:১১

সংখ্যালঘু নির্যাতন রোধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি প্রবাসীদের দাবী

শনিবার (৯ জানুয়ারি) পূর্ব লন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন রোধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশের সরকারের প্রতি সেকুলার মুভমেন্ট বাংলাদেশ ইউকের পক্ষ থেকে দাবী জানানো হয়। সংগঠনের সভাপতি পুষ্পিতা গুপ্তার সভাপতিত্বে সংগঠনের সদস্য সাংবাদিক ও ব্লগার জুয়েল রাজ, মুসলেহ জাহিন এনামুল, সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রেস কনফারেন্সে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য দ্বিগজয় শুভ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি দৈনন্দিন ঘটনা। আগে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে হিন্দুরা অপেক্ষাকৃত কম নির্যাতিত হতো, এখন সব আমলই সমান।গত সাত বছরে সংখ্যালঘুর ওপর অত্যাচার যেকোনো আমলের থেকে খুব একটা কম নয়।বিদায়ী বছরে এমন একটি দিনও হয়ত পাওয়া যাবে না যেদিন কোন না মিডিয়ায় দেশের কোথাও না কোথাও হিন্দু মন্দির বা মূর্তি ভাঙচুর, হিন্দুর জমি দখল, নাবালিকা ধর্ষণ ও ধর্মান্তরিতকরণ বা দেশত্যাগের হুমকি ইত্যাদি খবর প্রকাশিত হয়নি।

সদ্য অনুষ্ঠেয় পৌরসভা বা স্থানীয় নির্বাচনে আমরা খুশী যদিও কোন দলই সংখ্যালঘুদের তেমন মনোনয়ন দেয়নি, তাই দু'চারজন হাতেগোনা ব্যতীত কেউ জেতেওনি। ব্লগার হত্যার বিচারে আমরা আনন্দিত এবং আশা করবো এই বিচারটি ত্বরান্বিত হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাক এবং দেশে সব খুনের বিচার হোক আমরা তা চাই। দেশে প্রথম আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে আমরা শঙ্কিত। দেশ সন্ত্রাসমুক্ত হোক আমরা কামনা করি।আমরা জামায়েতের সাথে সাথে আওয়ামী ওলামা লীগ ও নিষিদ্ধের দাবি জানাই। বাংলাদেশ ১৯৭২ সংবিধানের আলোকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ হোক আমরা তা চাই।

আমাদের দাবী সরকার ৩১শে মার্চ ২০১৬-এর অন্তত: যেকোনো একটি অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বা বিচার করে প্রমাণ করুন তারা সংখ্যালঘু সমস্যা সমাধানে সত্যিকার অর্থেই আন্তরিক। বাংলাদেশে বিচার না হওয়ার রীতি নূতন নয়, নির্যাতিত যখন সংখ্যালঘু, প্রশাসন তখন উল্টোমুখে তাকিয়ে থাকে। ২০০১ সালের অত্যাচারের বিচার আমরা পাইনি।বাংলাদেশে হাজার হাজার মুর্তি-মন্দির ভাঙ্গা হলেও আজ পর্যন্ত একজনের বিচার হয়নি, বা কেউ শাস্তি পায়নি। শইপা বড়ুয়া বাংলাদেশে তার পরিবারের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে একটা উদাহরণ সৃষ্টি করার দাবী জানান তাঁরা। যাতে করে ভবিষ্যতে কেউ কোন ধরণের নির্যাতনের সাহস না পায়। মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার সম্ভব হলে কিংবা রাজন হত্যা মামলার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে পারলে সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে নয় কেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই এই কাজটি করা সম্ভব বলে তাঁরা আশা করেন। আগামী তিন মাসে মধ্যে কোন অগ্রগতি না হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যারা সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন, সেই সব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে অনশন করবেন বলেও জানান তাঁরা।

শনিবার একযোগে স্যেকুলার বাংলাদেশ মুভমেন্ট, ইউকে এবং সিওআরএমবি, ​হিন্দু ফোরাম সুইডেন, ইউরোপীয় ঐক্য পরিষদ প্যারিস। বাংলাদেশ মাইনরিটি কাউন্সিল জেনেভা, ফ্রান্স ঐক্য পরিষদ, কানাডা ঐক্য পরিষদ, ক্যাম্ব (ক্যাম্পেইন এগেনস্ট এট্রসিটিস্ অন মাইনরিটিস অব বাংলাদেশ) কলকাতা , আরইএস (রিসার্চ এন্ড এম্পাওয়ারমেন্ট )বাংলাদেশ, সিপিআর এম্বি ফিন্ল্যান্ড, ঐক্য পরিষদ, ইতালি, সিঙ্গাপুর, হিন্দু গ্র্যান্ড এল্যায়েন্স, ডিএসসি রাশিয়া অস্ট্রেলিয়া, সংখ্যালঘু স্বার্থ সংরক্ষণ ও অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ, বাংলাদেশ,মালয়েশিয়া বাংলাদেশ মাইনরিটি রাইটস ম্যুভ্মেন্ট, ইউএসএ ও টাইমলাইন বাংলাদেশ ইউএস এ সহ বিশ্বের ১৫ টি দেশে একই দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে ও জানিয়েছেন এর বক্তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত