জুয়েল রাজ,লন্ডন

০৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ২২:৩৯

প্রকাশ্যে এলো যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভক্তি

একই দিনে একই সময়ে দুই নেতার সংবর্ধনার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ্যে এলো যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিভক্তি।  বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্য সফররত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিলেট দুই আসনের সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীকে এক সংবর্ধনা দেয় লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সহ সব নেতাগণ।

অন্যদিকে একই দিনে প্রায় একই সময়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কে গণসংবর্ধনা দেয়ার দাওয়াত পত্র মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয় এবং আওয়ামী লীগও এর অঙ্গ সংগঠনের কোন কোন নেতা কর্মী সেই সংবর্ধনায় উপস্থিত হয়েছিলেন। ব্রিটেনের সাধারণ নেতাকর্মীরা একে শক্তির মহড়া হিসাবে দেখছেন।

মূলত যুক্তরাজ্য আওয়ামী যুবলীগের কমিটি নিয়ে আওয়ামী বিভক্তির শুরু হলেও তা প্রকাশ্যে আসে নাই এতোদিন। আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বনাম যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে কেন্দ্র করে দুইটি বলয় তৈরি হয়েছিল। শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিকীর আশীর্বাদপুষ্ট হিসাবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন আনোয়ারুজ্জামান।যুক্তরাজ্য যুবলীগ এবং ছাত্রলীগে নিজের পকেটের মানুষদের কমিটিতে স্থান দেয়ার মধ্য দিয়ে, তাদের মাঝে নিজেকে অবিসংবাদিত নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা।

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা কর্মীরা সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ শরীফ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক এর নেতৃত্বে অন্য আরেকটি বলয়ে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এই দ্বন্ধ দীর্ঘদিন ধরেই চললেও তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে বা প্রকাশ্যে আসে নাই কোনদিন। সাধারণ নেতা কর্মীরা তাঁদের পছন্দের বলয়ে রাজনীতি করেছেন। যদি ও অনেকেই মনে করেন আনোয়ারুজ্জামানের রাজনীতির কাছে অনেকটাই নিষ্প্রভ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলয়। আর এর কারণ হিসাবে শেখ রেহানা পরিবারের সাথে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেন অনেকে।

এই প্রথম একই দিনে একই সংগঠনের ব্যানারে দুইটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে আসলো যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অন্তর্দ্বন্ধের বিষয়টি। উল্লেখ্য শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রবাসী নেতা হিসাবে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বালাগঞ্জ বিশ্বনাথ আসন থেকে এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে সিলেটের রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। একই নির্বাচনী এলাকায় জনাব আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও এমপি প্রার্থী হতে ইচ্ছুক। মূলত বাংলাদেশের রাজনীতির প্রভাবই লন্ডনে এসে বিভক্তির সৃষ্টি করেছেন।

সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী আনয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজক লন্ডন মহানগর আওয়ামী লীগ হলে ও ব্যানারে তা পরিবর্তন করে এন আর বি ইউকে নামে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।

এই ব্যাপারে জানতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মোবাইলে বারবার চেষ্টা করলেও তাঁদের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত