জুয়েল রাজ, যুক্তরাজ্য

১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২৩:১৪

লন্ডন হাইকমিশনের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ‘উপেক্ষিত’ বঙ্গবন্ধু!

যুক্তরাজ্যের লন্ডন হাইকমিশনের  মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অনেকটা উপেক্ষিত ছিলেন জাতির জনক বঙ্গববন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ নিয়ে ক্ষোভে প্রকাশ করছেন স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে লন্ডনে উদযাপিত বাংলাদেশের ৪৫তম মহান বিজয় দিবস।  শুক্রবার সকাল ১০ টায় হাইকমিশন ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ নাজমুল কাওনাইন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর হাইকমিশন ভবনের হল রুমে দিবসটির তাৎপর্যের উপর অনুষ্ঠিত হয় এক আলোচনা অনুষ্ঠান।

কিন্তু ব্যানারে কোথাও বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল না। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। প্রশ্ন তুলেছেন নব নিযুক্ত হাই কমিশনারের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। যুক্তরাজ্য যুবলীগ নেতা জামাল খানের একটি স্ট্যাটাস মূলত ভাইরাল হয়ে পড়ে।

বিজয় দিবসের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি না থাকার কারণ জানতে চাইলে হাইকমিশনের মিনিস্টার প্রেস নাদিম কাদির বলেন, ‘ইতিপূর্বে হাইকমিশনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছিলো না। স্বাধীনতা দিবস ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দিয়ে ডিজাইন করে ব্যানার বানানো হয়। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার না করার  অন্য কোনও এজেন্ডা নেই। সরকারের নির্দেশিত গাইডলাইন মেনেই অনুষ্ঠান, ব্যানার এসব করা হয়ে থাকে। এখানে কারো  ব্যাক্তিগত কিছু করার নেই।

বিশ্বের বিভিন্ন হাই কমিশনে ছবি ব্যবহারের উদাহরণ দিলে, তিনি বলেন সেটা একান্তই তাঁদের বিষয়।

এ ব্যাপারে ফেইসবুকে যুক্তরাজ্য যুবলীগের  যুগ্ম সম্পাদক জামাল খান বলেন " আমি খুব সহজ ভাবে বুঝি, যে মানুষের জন্য দেশ, আমাদের স্বাধীনতা,  বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের ব্যানারে তাঁর ছবি না থাকা আমাকে ব্যাক্তিগত ভাবে ব্যাতিত করেছে। বিশ্বের অন্যান্য হাই কমিশনের ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি সহ ব্যানারই দেখেছি আমি"।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। আলোচনার শুরুতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা কারো দয়ায় আসেনি, রক্তের বিনিময়ে এসেছে আমাদের এই স্বাধীনতা। আন্তজাতিক ক্ষেত্রে যুদ্ধকালীন সময়ে কূটনৈতিক সাফল্যের কারনে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে খুব অল্প সময়ে।

হাইকমিশনার তাঁর বক্তব্যের শুরুতে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ও নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে শহীদ হয়েছেন, সেই সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বীরঙ্গনা ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসে বসবাসরত বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাঙ্গালীদের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত