নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:৩১

হলের পাশেই বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিকট শব্দে অতিষ্ঠ শাবি ছাত্রীরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) মূল ফটকের বিপরীত দিকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী দুটি ছাত্রী হল আমীর কমপ্লেক্স ও ফজল কমপ্লেক্স। ছাত্রী হলের অপ্রতুলতার কারণে নগরীর আখালিয়াস্থ এই দুটি বহুতল ভবনকে ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের থাকার ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই দুই অস্থায়ী হলের ঠিক পেছনেই বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র শাহজাহানউল্লাহ পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড'র অবস্থান।

দৈনিক পঁচিশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এ প্লান্ট থেকে সৃষ্ট উচ্চ মাত্রার শব্দের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন পার্শ্ববর্তী হল দুটিতে অবস্থানকারী ছাত্রীরা।

প্রায় একবছর ধরে আমীর কমপ্লেক্সে অবস্থান করা শাবির ইংরেজি বিভাগের ১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শায়লা খানম বলেন, “দিনভর এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উচ্চমাত্রার শব্দ হয়। সারাদিনে ক্লান্ত হয়ে হলে আসার পরে তীব্র এ শব্দে মাথা ব্যথা ধরে যায়। রাতে শব্দের কারণে ঘুমানোও যায় না।''

গণিত বিভাগের ১ম বর্ষ, ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ফাহমিদা বিনতে নূরও আমীর কমপ্লেক্সে থাকেন। তিনি জানান, “চব্বিশ ঘণ্টাই বিরক্তিকর এ শব্দ থাকে। রাতে এ শব্দ খুব বেশি সমস্যা করে। ঘুমানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। হলে উঠার প্রথম দিকের রাতগুলোতে ঘুমই হত না, এখন কিছুটা অভ্যাস হয়ে গেছে। পেছনের জানালার পাশের রুমগুলোতে শব্দের তীব্রতা অসহনীয়।”

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “একবছর বা দেড় বছর পরে ক্যাম্পাসের ভেতরের স্থায়ী হলে সিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে অনেকেই ব্যাপারটা সহ্য করে নেয়।”

ফজল কমপ্লেক্সে অবস্থান করা বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মোলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১ম বর্ষ, ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী হুমায়রা রশিদ তুবা জানান, “ছুটি হলে যখন বাড়ি যাই তখন অনেকটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। মনে হয় কিছুদিনের জন্য রক্ষা পাওয়া যাবে।”

এ ব্যাপারে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হল ও ফজল কমপ্লেক্সের প্রভোস্ট শাবির ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরিফা ইয়াসমিন সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এখনো পর্যন্ত হলে অবস্থানরত কোন শিক্ষার্থী এরকম সমস্যার কথা জানায় নি। জানালে ব্যাপারটি অবশ্যই বিবেচনায় নেয়া হত।”

পরিবেশ অধিদপ্তর, সিলেট এর সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ শব্দ দূষণের ব্যাপারে সরকারের কিছু নীতিমালা আছে। কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করে তাহলে ব্যাপারটা আমরা খতিয়ে দেখতে পারবো, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই হোক, অথবা আমীর বা ফজল কমপ্লেক্সের মালিক কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই হোক।”

এ ব্যাপারে আখালিয়াস্থ শাহজাহানউল্লাহ পাওয়ার প্লান্টের প্লান্ট ব্যবস্থাপক আলমগীর কবির বলেন, “শব্দের সহনীয় সীমা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আমাদের কাছে আছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও এ বিষয়ে আমরা কোন অভিযোগ পাই নি।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত