নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৮ ১৪:৫৬

শাবিতে অর্ধনগ্ন করে র‌্যাগিং: দুজনকে স্থায়ী বহিস্কারসহ ১৯ শিক্ষার্থী দণ্ডিত

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিংয়ের দায়ে দুই শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিণ্ডিকেট। স্থায়ীভাবে বহিস্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী হামিদুর রহমান রঙ্গন এবং আশিক আহমেদ হিমেল।

বুধববার শাবি সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। হিমেল ও রঙ্গনকে স্থায়ী বহিস্কার ছাড়াও মাহমুদুল হাসান এবং শাহরিয়ার জামান রাহীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।  ইসতিয়াক আহমেদকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।। এছাড়া ৫ জন জনকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা ও ৯ জনকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

দুইজনকে স্থায়ী বহিস্কারসহ ১৯ জনকে দণ্ড প্রদানের কথা জানিয়ে শাবি প্রক্টর ও এ ঘটনায় ঘটিত তদন্ত কমিটির প্রধান ড. জহিরুল ইসলাম বলেন, সেদিন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নবীন ৬ শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের সময় একই বিভাগের সিনিয়র ব্যাচের ২১ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। তবে দুইজনের কোনো দোষ পাওয়া যায়নি। এই ২ জনকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বাকী ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়। এদের মধ্যে হিমেল ওই নবীন শিক্ষার্থীদের অর্ধনগ্ন হতে বাধ্য করে এবং রঙ্গন তা ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। তাই তাদের স্থায়ী বহিস্কার করা হয়েছে।

র‌্যাগিংয়ের ঘটনা তপোবনের যে বাসায় হয়েছিলো সেই বাসাটিতে হিমেল ও রঙ্গন থাকেন বলেও সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান প্রক্টর।

প্রক্টর বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিণ্ডিকেট এই ব্যবস্থাগ্রহণ করে। বুধবার সকালে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সিণ্ডেকট সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের তপোবন আবাসিক এলাকার ‘তাফাদার ভিলায়’ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত আটকে রেখে অর্ধনগ্ন করে র‌্যাগ দেয় একই বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ২০ শিক্ষার্থী এবং পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ১ শিক্ষার্থী। পরিচয় দেওয়ার নামে তাদেরকে অর্ধনগ্ন করে র‌্যাগ দেয়াসহ অর্ধনগ্ন না হতে চাইলে একপর্যায়ে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে জোর করে অর্ধনগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অশ্লীল ক্যাপশন দিয়ে একটি গ্রুপে পোস্ট করা হয় এবং বেশ কিছু সময় পরে ডিলিট করা হয়। বিষয়গুলো কাউকে বললে তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার দেন সিনিয়ররা।

এ ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সমালোচনার প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত