নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ মে, ২০২১ ০১:২২

ডিভোর্স কথাটা শুনলে অনেকের কান ভোঁ-ভোঁ করে ওঠে: অপু

বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী মাহমুদ পারভেজ অপু। শনিবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমন বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন মাহি। এরপর রোববার দিনভর চলছে এ নিয়ে আলোচনা।

বিচ্ছেদের ব্যাপারে রোববার রাতে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন অপু।

এতে তিনি লিখেছেন- একটি সম্পর্ক গড়তে গেলে যেসব গুণ থাকে সেগুলো হলো সততা, ওয়াদা, বিশ্বস্ততা, বন্ধুত্ব, দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা, বোঝার ক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও ভালোবাসা, নিজস্ব বিশ্বাস ইত্যাদি, এবং সম্পর্ক হওয়ার পর সেটা পরিবর্তিত হতেই পারে, আমরা বেঁচে আছি সম্পর্কে নিয়ে সম্পর্কের বন্ধনে বন্দি হয়ে। আবার সম্পর্ক কখনো শেষও হয় না শুধু পরিবর্তিত হয়।

বিচ্ছেদ যে কোনও সম্পর্কে যে কোনও সময় আসতে পারে। যে কোনও বিচ্ছেদই কষ্টদায়ক কিন্তু  প্রত্যেক মানুষের নিজের মতো করে বাঁচার স্বাধীনতা রয়েছে। আর এতে করে তিনি/তারা নিজের মতো করে ভালো থাকতেই পারেন। সম্পর্কগুলো স্থায়ী হোক এমনটাই সবাই চায় কিন্তু বাস্তুবিক তা হয় না। দেখা যায় সারাজীবন দুজন পাশাপাশি থাকার পর মৃত্যু এসে একজনকে নিয়ে যায়। বা দুজনের মতের মিল ও বিশ্বাস আলাদা হলে তখন একসাথে থাকা র চেয়ে আলাদা থাকতে চাই, এতে দোষের কিছু তো নাই-ই বরং এটা উভয়ের জন্য ভালো, আমাদের বাঙালি সমাজ এখনও সেভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি। তাই তো ডিভোর্স কথাটা শুনলেই অনেকেরই কান ভোঁ-ভোঁ করে ওঠে। এই কারণেই ডিভোর্সির দিকে কপাল কুঁচকে তাকানোটাই এই সমাজের একটা অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অপু লিখেন- সম্পর্ক তৈরী করার মতন, সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসাও খুব স্বাভাবিক। মানুষের জীবনে অনুভূতির সংকোচন, সম্প্রসারণ হতেই পারে। একসাথে থাকতে না চাওয়ার কারন জন্মাতে পারে। ভাল না লাগতে পারে। বিশেষ কোন কারনে আলাদা হওয়ার ইচ্ছা হতে পারে। আবার কেউ কেউ মানিয়ে নিয়েও বেঁচে থাকে। দুজন মানুষের ভেতর আভ্যন্তরীন বনিবনা না হলে, একসাথে থেকে তিক্ততা বাড়ানোর কোন মানেই হয় না। তারচেয়ে, দুজন মানুষ আলাদা হয়ে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটুকু বাঁচিয়ে রাখার দৃশ্যই সুন্দর। যে কোনও বিচ্ছেদই কষ্টদায়ক। কিন্তু কোনও সম্পর্কই হয়তো পুরোপুরি শেষ হয় না, সময়ের সঙ্গে বদল আসে দুজনের বোঝাপড়ায়। আসলে ডিভোর্সের পর সম্পর্কের নাম বদলে যায় শুধু। একে অপরের কথা শেষ হয় যায় না, কেউ কারো শত্রু হয়ে যায় না বন্ধুত্বও শেষ হয়ে যায় না। অনেক চাওয়া পাওয়া অনেক ভালোবাসা, আকাঙ্খার ফসলে বৈবাহিক সমন্ধ গড়ে উঠে তার ভাঙন কালে যন্ত্রনা হওয়া অবশ্যম্ভাবী কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার জীবন সেখানেই শেষ হয়ে গেল বা শেষ হয়ে গেলো এমনও নয় প্রাক্তন এর প্রতি থাকবেই তীব্র বিদ্বেষ!

অপু আরও লেখেন- ডিভোর্স সত্ত্বেও প্রাক্তনের প্রতি সম্মান ধরে রাখা সম্ভব। আর এই সম্মান টা মনের মধ্যে পোষণ করেই নিজেদের মর্যাদা অটুট রেখে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। আর আশা করছি আমাদের পরিচিত পরিজনেরা শুভকঙ্খীরা আমাদের এই সিদ্ধান্তকে পজিটিভভাবে গ্রহণ করে আমাদের সাথে সাথে থাকবেন। আর একটা অনুরোধ করতে চাই আদর্শিক পার্থক্য বা নিজের ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের কারণে গালিগালাজ তথা নেতিবাচক মানসিকতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। এখনো কিছু মানুষ আছে যারা মূল্যবোধ, দায়বদ্ধতা, শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস এই শব্দগুলোর মানে বুঝে। তাই সবার প্রতি অনুরোধ, নিজের আপত্তি বা ক্ষোভ যৌক্তিক এবং শোভনীয় ভাষায় তুলে ধরুন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত