১৪ জুন, ২০২১ ০০:৩৮
ঢাকাই ছবির আলোচিত নায়িকা পরীমণি ফেসবুক পোস্টে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার যে অভিযোগ এনেছেন, তা উত্তরা বোট ক্লাবের সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে বলে জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী নিজেই।
রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে তিনি সংবাদমাধ্যমে এ কথা বলেছেন।
এরআগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে নিজেকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন।
তখন অবশ্য কার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, তা বলেননি পরীমণি। এর প্রতিকার চেয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তাও চেয়েছেন।
পরে নিজের বনানীর বাসা থেকে সংবাদমাধ্যকে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন পরীমণি।
তিনি জানান, চারদিন আগে রাতে তার বন্ধু অমি তাকে উত্তরা ক্লাবে নিয়ে যান। এসময় তার সঙ্গে মেকআপম্যানও ছিল। সেখানে খাওয়া-দাওয়া এবং ড্রিংকস করানো হয় পরীমণিসহ সবাইকে। এরপর একে একে লোকজন চলে যায়। তখন পরীমণির মেকআপম্যানকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে পরীমণিকে নির্যাতনের চেষ্টা চালান ক্লাবের সদস্য নাসির উদ্দিন। পরীমণি বাধা দিলে তাকে হত্যাচেষ্টাও চালানো হয়। হঠাৎ পরীমণি মাটিতে লটিয়ে পড়েন। এসময় তাকে লাত্তিও মারেন নাসির উদ্দিন।
পরীমণি আরও জানান, এ ঘটনার পর তারা রাতেই বনানী থানায় যান। সেখানে অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তাদের টেস্টের জন্য হাসপাতালে যেতে বলে। পরে পরীমণি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাওয়া শুরু করেন। যাওয়ার পথেই তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে ফিরে বাসায় চলে আসেন।
বাসায় ফেরার পর তিনি দুইদিন অসুস্থ ছিলেন। এরপর তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোথাও থেকে কোনো সাড়া পাননি।
পরে রোববার রাতেই নিজের ফেসবুক পেজে এই স্ট্যাটাস দেন।
পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র।
আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমি এর বিচার চাই।
এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার ? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু বেনজির আহমেদ আইজিপি
স্যার! আমি কাউকে পাইনা মা।
যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!
আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারিনা। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কি বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মত (যাদের অনেক নাম এক্ষুনি মনে পরে গেল) তাদের মত আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।
আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন!
আমি তাদের মত চুপ কি করে থাকতে পারি মা?
আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোন অন্যায় মেনে নিতে!
আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহুর্ত মাকে খুব দরকার এখন,
মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে , ভিষন রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার ,একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্যে দরকার।
আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্যে আপনাকে দরকার মা।
মা আমি বাচঁতে চাই।
আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।
আপনার মন্তব্য