সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ মার্চ, ২০২৩ ২৩:৩৯

সবাই কেন ধূমপানটাকেই ইস্যু করছে, প্রশ্ন আঁখির

অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ দুই মাসের চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। মঙ্গলবার আঁখিকে ছাত্রপড় দেওয়া হয়। তবে হাসপাতাল ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন শুটিংবাড়িতে অগ্নিদগ্ধ হওয়া এই অভিনেত্রী। সেখানে অগ্নিদগ্ধ হওয়া ও তার বিরুদ্ধে ছাড়ানো গুজব নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন তিনি।

আঁখি বলেন, আইসিইউতে থাকার সময় বিষয়টি (সিগারেটের আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হওয়া খবর) শুনতে পাই। তখন আমার মনে হয়েছে মারা গেলে ব্লেম (দোষ) নিয়ে মরতে হবে। আমি এভাবে মরতে চাইনি। আমার একটা ক্লিন ইমেজ আছে। আমি সবসময় সরাসরি কথা বলি। আর কেউ আমাকে আঁচড় দিতে আসলে আমি সেটা কখনও হতে দেব না। এগুলো নিয়ে ভয় পেলে আজ আপনাদের সামনে আসতাম না। পোড়া হাত, পোড়া চেহারা দেখাতাম না। নায়িকারা মেকআপ ছাড়া বাইরেই আসতে চান না। আমার নামে কুৎসা রটানো হয়েছে।

ধূমপান প্রসঙ্গে শারমিন আঁখি বলেন, ধূমপান থেকে যদি আগুনের সূত্রপাত হয়েও থাকে, সবাই কেন ধূমপানটাকেই ইস্যু করছে? বিস্ফোরক তো সেখানে ছিলই। আমি এখনও ট্রমার মধ্যে আছি। চোখের সামনে এখনো সব দেখতে পাই।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, শাড়ি পরতে হবে, তাই শাড়ি পরার আগে ওয়াশরুমে যাই। স্পার্ক হচ্ছে বলে মনে হলো। গ্যাসের আগুনের মতো নীলচে কিছু দেখলাম। যখন বুঝতে পারলাম আগুন, সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললাম। বিস্ফোরণ হলো। দরজার অস্তিত্ব বলতে কিছু ছিল না। বাথরুমের কমোড থেকে বাইরে ছিটকে পড়ি। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম দুই হাতের চামড়া ফেটে যাচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আঁখির স্বামী নাট্য নির্মাতা রাহাত কবির, চিকিৎসকদের মধ্যে হাসপাতালের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন, পরিচালক অধ্যাপক রায়হানা আউয়াল, সহকারী পরিচালক হোসাইন ইমাম, সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমেদ ও রেজিস্ট্রার সোহানা আরজু উপস্থিত ছিলেন।

রাহাত কবির বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে সিগারেটের প্যাকেট, সিগারেটের টুকরা, লাইটারের ছবি দেখেছি। লাইটারটা গলেনি। প্যাকেট পুড়েনি। এগুলো কেন অক্ষত থাকল তা হাউস মালিকের কাছে জানতে চান। একই ঘটনা অন্য শুটিং হাউসে ঘটতে পারে। জবাবদিহির জায়গা তৈরি করতে হবে। দুর্ঘটনার পর থেকে ওই হাউসে প্রতিদিন শুটিং হচ্ছে।

দুর্ঘটনার পর মামলা না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শারমিন আঁখি মৃত্যুসজ্জায় ছিলেন। তখন অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে তাঁকে বাঁচানো গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ ছাড়া আঁখি এবং তাঁর দুটো সংগঠন আছে, সেখানে তাঁরা বিষয়টি জানাবেন। এরপর মামলা করবেন কি না, তা সিদ্ধান্ত নেবেন। আর এখন শারমিন অনেকটাই সুস্থ, তিনি নিজেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি মিরপুরের একটি শুটিংবাড়িতে বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হয়েছিলেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। পরে তাঁকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। ওই বিস্ফোরণে আঁখির হাত, পা, চুলসহ ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত