সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ মে, ২০১৫ ০১:৩০

অ্যাপলকে হটিয়ে আবারো শীর্ষে স্যামসাং


মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যাপলকে হটিয়ে আবারো স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষে উঠে এল দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। গত প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মার্কিন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ে বেশি স্মার্টফোন সরবরাহ করে পুরনো মুকুট ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে গ্যালাক্সি সিরিজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকস তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। খবর রয়টার্স ও এপি।

অ্যাপলের সবচেয়ে কার্যকর হাতিয়ার আইফোন। এ ডিভাইসের ওপর ভর করেই তারা এখন বাজারমূল্যে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি। নতুন আইফোন আসা মানেই অ্যাপলপ্রেমীদের রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাওয়া। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আইফোন কিনতে গ্রাহকের যত কষ্টই হোক না কেন, তা হাতে আসামাত্র সব কষ্ট বিলীন হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটি মূলত আইফোনের কারণেই এতটা জনপ্রিয়। তবে আইফোনের পাশাপাশি আইপ্যাড, ম্যাক কম্পিউটার, আইপড ও সাম্প্রতিক অ্যাপল ওয়াচও তাদের আয়ে বড় প্রভাব ফেলছে। কিন্তু তা আইফোনের সমকক্ষ হতে পারছে না। গত বছরের শেষ দিকে বাজারে আসে অ্যাপলের সর্বশেষ মডেলের আইফোন সিক্স ও সিক্স প্লাস। ডিভাইসটি তাদের স্মার্টফোনের বাজারে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে শীর্ষস্থানে পৌঁছে দেয়।

স্মার্টফোনের বাজার দখলের দৌড়ে কোনো অংশেই কম যায় না স্যামসাংও। দীর্ঘ সময় বাজারটির শীর্ষে থাকার পর অ্যাপলের কাছে অবস্থান হারানো তাদের জন্য কিছুটা কষ্টকরই ছিল। কিন্তু বছরের প্রথম প্রান্তিকে আবারো তারা নিজেদের পুরনো মুকুট ফিরিয়ে এনেছে। এক্ষেত্রে স্যামসাংয়ের বাজার অবস্থা নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। গত বছর পুরোটাই খারাপ গেছে কোরীয় প্রতিষ্ঠানটির। এ সময় তাদের মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমে। স্মার্টফোনের বাজারে শীর্ষস্থান অর্জনের মানে যে তাদের সরবরাহের হার বেড়েছে, তা নয়। গত প্রান্তিকে তারা মোট সরবরাহ করে ৮ কোটি ৩২ লাখ স্মার্টফোন। এতে স্মার্টফোনের বাজারে তাদের দখল দাঁড়ায় ২৪ শতাংশ। কিন্তু জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোরীয় প্রতিষ্ঠানটির স্মার্টফোন সরবরাহ  আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ শতাংশ কম। আর এ সময়ে অ্যাপলের বাজার দখল ছিল ১৮ শতাংশ। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, গত তিন প্রান্তিকের মধ্যে জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকেই তাদের মুনাফা এসেছে সবচেয়ে বেশি।

স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকসের নির্বাহী পরিচালক নেইল মস্টন বলেন, ‘এশিয়াসহ বেশকিছু অঞ্চলে স্যামসাং বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। কিন্তু তাদের বৈশ্বিক পারফরম্যান্স এ অঞ্চলগুলোর পিছুটানকে পুষিয়ে স্মার্টফোন সরবরাহের দিক দিয়ে বাজারের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।’

বিশ্লেষকদের মতে, স্যামসাং আবারো তাদের পণ্যের নকশার উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছে। আর এ প্রবণতা তাদের আবারো মুনাফা বৃদ্ধির পথে যেতে কাজে দেবে। গ্যালাক্সি এস সিরিজের কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকও প্রতিষ্ঠানটির ভালো যাবে বলে ধারণা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। এতে স্মার্টফোনের বাজারে তারা কিছুটা বিবর্ণ জৌলুস ফিরে পাবে কিনা তা দেখার সময় এসেছে।

এপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, গত প্রান্তিকে কোরীয় প্রতিষ্ঠানটির আয়ের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৬৩ হাজার কোটি ওন। যেখানে আগের বছরের একই প্রান্তিকে তাদের আয় ছিল ৭ লাখ ৪৯ হাজার কোটি ওন। অর্থনৈতিক তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টসেটের তথ্যমতে, প্রতিষ্ঠানটি জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ৪ লাখ ৯৭ হাজার কোটি ওন আয় করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। স্মার্টফোনের বাজারে গত বছরের অবস্থা থেকে স্যামসাং উত্তরণ করছে বলেই মনে হচ্ছে। তবে এ ধারা কত দিন অব্যাহত থাকে, তাই এখন দেখার বিষয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত