সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৩:৩২

স্ত্রীর লাশবাহী সেই স্বামীকে অনুদান দিলেন বাহরাইনের রাজা

ভারতের উড়িশা রাজ্যের বাসিন্দা ধন মাঝির কথা মনে আছে? যিনি স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে ১০ কিলোমিটার হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর পাশে চোখ মুছতে মুছতে হাঁটছিল তার মেয়ে।

গত ২৫ অগাস্ট তার সেই নির্মম ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল দেশ-বিদেশের সব কাগজে, টিভিতে।

ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা জেলা হান্ডির হাসপাতাল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে মৃতা স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি ধন মাঝি। তাঁর অনেক অনু্রোধেও গাড়ি দেয়নি হাসপাতাল। তাই বাধ্য হয়েই স্ত্রীর লাশ কাঁধে তুলে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করেন তিনি।

প্রায় ১০ কিলোমিটার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটার পর এক স্থানীয় টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক তাকে দেখতে পান। তিনিই জেলা প্রশাসকের কাছে ফোন করে গাড়ি আনাবার ব্যবস্থা করেন।

সেই ধন মাঝি আবারও সংবাদে। তার দুর্দশার খবর সংবাদপত্রে পড়ে জানতে পারেন বাহরাইনের রাজা হামাদ বিন ইশা আল খলিফা। ধন মাঝির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন খলিফা। দিল্লির বাহরাইন দূতাবাসে পৌঁছয় রাজার পাঠানো প্রায় নয় লক্ষ টাকার চেক। সেই চেক নিতেই বৃহস্পতিবার জীবনে প্রথমবার বিমানে চেপে দিল্লি গিয়েছিলেন ধন মাঝি।

এর আগে বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রীও অর্থ সহায়তা করেছেন। ওডিশার কয়েকজন বিধায়কও তার হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। সাহায্য এসেছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকেও।

রাজধানী ভুবনেশ্বরে আদিবাসী শিশুদের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নিয়েছে তার তিন মেয়ের আজীবন পড়াশোনার। মেয়েদের সেই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েই দিল্লির বিমান ধরেন তিনি।

রাজার চেক নিতে যাওয়ার সময়েও ধন মাঝির পড়নে ছিল নীল লুঙ্গি আর একটা পুরনো জামা, কাঁধে গামছা। বাহরাইন দূতাবাসে সংবাদমাধ্যমকে ধন মাঝি নীল রঙের চেকটা দেখান। ব্যাংক অফ বাহরাইন এন্ড কুয়েতের ওই চেকে লেখা টাকার অঙ্কটা ৮,৮৭,৯৪৯।

তিনি জানান, এই সব টাকাই তিনি ব্যাংকে দীর্ঘমেয়াদি আমানত হিসাবে রেখে দেবেন, যাতে তার মেয়েদের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পারেন। নিজের মেয়েদের পুলিশ বা ডাক্তার বানানোর ইচ্ছা ধন মাঝির।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত