সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

৩০ আগস্ট, ২০১৭ ১১:২৯

প্রবল বৃষ্টিতে স্থবির মুম্বাই, মৃত ৫, ‘রেড এলার্ট’ জারি

প্রবল বর্ষণে স্থবির হয়ে পড়েছে ভারতের মুম্বাই ও এর আশপাশের এলাকার জনজীবন। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশের ৫ জনের।  ‘রেড এলার্ট’ জারি করে শহরের বাসিন্দাদের জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) শহরটিতে প্রায় ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, একদিনে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় এই পরিমাণ ২৯ গুণ বেশি বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।

২০০৫ সালের জুলাইয়ের পর শহরটিতে একদিনে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড এটি। আগামী ২৪ ঘন্টায় আরো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়ে শহরের বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

বুধবার (৩০ আগস্ট) শহরের সকল স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক টুইটের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনাভিস মুম্বাই ও এর আশপাশের বাসিন্দাদের ‘জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে না থাকার পরামর্শ দিয়েছেন’ কিন্তু ‘প্রয়োজনীয় সেবাগুলো’ অব্যাহত রাখা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন।

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শহরের ওপর থেকে ঝড়ের প্রভাব সরে যেতে থাকায় বুধবার বৃষ্টির তীব্রতা অনেকটা কমে আসলেও আরো অন্তত ২৪ ঘন্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন তারা।

এর আগে ২০০৫ সালের জুলাইতে কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় অচল হয়ে পড়েছিল ভারতের বৃহত্তম শহরটি।

মঙ্গলবার ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি সাগরের পূর্ণ জোয়ারে শহরের কোনো কোনো অংশ পাঁচ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়।

বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শহরের একট বাড়ি ধসে পড়ে দুটি শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। শহরের পার্শ্ববর্তী থানেতে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় ৩২ বছর বয়সী এক নারী ও কিশোরী মারা গেছেন এবং আরো দুজন আহত হয়েছেন।

লোকাল ট্রেন সার্ভিস আবার চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যদিও অধিকাংশই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে ছেড়েছে। বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

এতে ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল লাখ লাখ যাত্রী ভোগান্তিতে পড়ে। অনেকে স্টেশনগুলোতে আটকা পড়ে থাকেন। শত শত যাত্রী রেললাইনের ওপর জমে থাকা কোমর সমান পানির মধ্যে দিয়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা হন। পরে পানি সরার পর আটকে পড়া যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সারারাত ধরে ট্রেন চালায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে লোকজন গাড়ি ছেড়ে কোমর সমান পানি দিয়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হতে বাধ্য হয়। পুলিশের আশ্বাস পেয়ে কেউ কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় পানির মধ্যে ফেলে রেখে হেঁটে চলে যান। সন্ধ্যায় সাগরে ‍পূর্ণ জোয়ারের সময় পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়ে।

মুম্বাই বিমানবন্দরে অন্তত ১০টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়, বেশ কয়েকটির ফ্লাইটকে ঘুরিয়ে অন্যত্র পাঠানো হয় আর কয়েকটি নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে রওনা হয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সকে (এনডিআরএফ) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উদ্ধারকাজ শুরু করতে ডুবুরি ও হেলিকপ্টার নিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ভারতের নৌবাহিনী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত